হামাসের কাছ থেকে গাজা সীমান্তের বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারে স্থল-আকাশ ও সমুদ্রপথে অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি হওয়া ইসরাইল অধিকৃত গাজা উপত্যকায় ‘সর্বাত্মক’ অবরোধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়াসহ সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে ইহুদিবাদী দেশটি।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত ইয়োভ গ্যালান্ত এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘হামাস অধ্যুষিত গাজার সর্বাত্মক নিয়ন্ত্রণ নিতে সেখানে কোনো বিদ্যুৎ, খাবার, পানি ও গ্যাস থাকবে না- সব বন্ধ থাকবে।’
ইসরায়েলি এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী ‘বদমাশ লোকজনের’ বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসাবে সর্বাত্মক অবরোধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাজাকে পুরোপুরি অবরোধ করছি… বিদ্যুৎ নেই, খাবার নেই, পানি নেই, গ্যাস নেই- সবই বন্ধ আছে।’
গ্যালান্ত ইসরাইলের এই অবরোধকে বর্ণনা করেছেন ‘হিংস্র পশুর মতো’ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে।
গাজার আকাশ এবং সমুদ্রপথ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ইসরাইল। তাদের সীমান্ত দিয়ে কারা যাতায়াত করবে এবং কী ধরনের পণ্য যাবে, সেটাও দেশটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
একইভাবে গাজার সঙ্গে সীমান্ত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে মিসর। ২০০৭ সাল থেকে এই অবরোধ চলছে। যার ফলে এ অঞ্চলের দুই লাখেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎ ও পানি সংকটে ভুগছেন। এ ছাড়া, চিকিৎসা সেবা ও ওষুধেরও অপ্রতুলতা রয়েছে সেখানে।
এদিকে গাজার সীমান্তবর্তী কাঁটাতারের বেড়ার আশপাশের সব শহরের দখল নেওয়ার দাবি করেছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ-এর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, গাজার বেষ্টনির কাছাকাছি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে পেরেছে সেনাবাহিনী। তবে সক্রিয় ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের সঙ্গে বিচ্ছিন্নভাবে সংঘর্ষ অব্যাহত আছে।
হাগারি বলেছেন, সীমান্তের নিরাপত্তা রক্ষায় হেলিকপ্টার, ড্রোন ও ট্যাংক ব্যবহার করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী ২৪টি শহরের মধ্যে ১৫টি থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
গাজায় রোববার রাতভর ইসরাইলি বাহিনী তাণ্ডব চালিয়েছে। ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় সোয়া লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে- ইসরাইলের বিমান হামলায় এক লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
এর মধ্যে রোববার স্থানীয় সময় রাত ৯টা পর্যন্ত প্রায় ৭৪ হাজার গাজাবাসী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটির স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।