কোথাও দেখা মিলছে না সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের

ফাইল ছবি

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই আড়ালে চলে গেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। গত সোমবার থেকে জনসমাগম বা সাধারণ মানুষের সামনে আসছেন না তিনি।  এমনকি গত দুইদিন অফিসও করেননি। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার আগেই আনোয়ারুজ্জামান যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার গুঞ্জন ওঠেছে। তবে তার ঘনিষ্টজনরা বলছেন, তিনি এখনও দেশেই আছেন। তবে কারো সাথে যোগাযোগ নেই।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে সিলেট সিটি করপোরেশনের তৃতীয় তলায় মেয়রের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে সুনশান নিরবতা। অথচও নগর ভবনের এই কার্যালয়টি সবসময়ই জনসমাগম থাকতো। এদিন নগর ভবনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও তেমন কর্মচাঞ্চল্য দেখা যায়নি।

এর আগের দিন মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২টায় নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায় হাতেগোনা কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে। দুপুর ১২টার আগেই তারা অফিস ছেড়ে চলে যান। এদিন ১২টার দিকেই নগর ভবনের নিচের গেইটে তালা ঝুলানো হয়।

সরকার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায়ে ঢাকার রাজপথ দখলে নিয়েছিল ছাত্র-জনতা। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপান্তরিত হওয়ার পর দেশজুড়ে সংঘাত আর তিন শতাধিক মানুষের মৃত্যুর মধ্যে শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে ভারতের পৌঁছে যাওয়ার আগেই সিলেটের অনেক আওয়ামী লীগ নেতা দেশ ছেড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পরেও অনেকে দেশ ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। আর যারা দেশে রয়েছেন তারার অনেকেই নিরাপদ স্থানে আত্মগোপনে গেছেন।

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পরপরই গা ঢাকা দেন সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। আনোয়ারুজ্জামান ছাড়াও সিসিকের অনেক কাউন্সিলরও রয়েছেন আত্মগোপনে। শেখ হাসিনার পতনের পর সিসিকের অনেক কর্মকর্তাদের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মেয়র কোথায় তা আমার জানা নেই। যেদিন ঝামেলা হয়েছিল (হাসিনার পদত্যাগের দিন) তার আগের দিন সম্ভবত তিনি অফিস করেছিলেন। এরপর থেকে আর অফিস করেননি। এখন কোথায় আছেন এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজ অফিস করছি। গতকাল রুম ভাঙা থাকায় কাজ করা সম্ভব হয়নি। আজ সকালে সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে আমি মিটিং করেছি। এখন সবাই স্বাভাবিকভাবে কাজ কর্ম করছেন।

মেয়র কোনো কিছু বলে গেছেন কী না এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তখন কোনোকিছু বলার মতো পরিস্থিতি ছিল না। কেউ কাউকে কোনো কিছু বলার সুযোগ ছিল না। যে যার মতো রয়েছেন।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদকের দা‌য়িত্বে রয়েছেন।