কেরুর মদে রেকর্ড আয়, চিনিতে লোকসান

দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় মদ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠান দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি বিদায়ী অর্থবছরে ৩৬৭ কোটি টাকার মদ বিক্রি করেছে। এতে লাভ হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। বিক্রি ও লাভ দুটিতেই রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

চিনিখাতে বছরের প্রতি মৌসুমে লোকসান হলেও চলতি বছর মুনাফায় রেকর্ড করেছে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি, যা প্রতিষ্ঠানটির এ যাবতকালের রেকর্ড। কেরু কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদেশ থেকে মদ আমদানি অনেকটা কমে যাওয়ায় কেরুর মদের চাহিদা বেড়েছে।

কোম্পানির দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে কেরুর মদ বিক্রি অন্য বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। প্রতি মাসে গড়ে ২০ থেকে ২৫ হাজার কেস মদ বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি ১৭৫ মিলিলিটার, ৩৭৫ মিলিলিটার ও ৭৫০ মিলিলিটারের বোতলে মদ বাজারজাত করে থাকে।

কেরুর রয়েছে ৯ ধরনের মদ। এগুলো হলো—ইয়েলো লেবেল মল্টেড হুইস্কি, গোল্ড রিবন জিন, ফাইন ব্র্যান্ডি, চেরি ব্র্যান্ডি, ইম্পেরিয়াল হুইস্কি, অরেঞ্জ কুরাকাও, জারিনা ভদকা, রোসা রাম ও ওল্ড রাম।

কেরুতে বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারের জন্য ১০ লাখ ৮০ হাজার প্রুফ লিটার মদ, ২৬ লাখ লিটার দেশি স্পিরিট ও ৮ লাখ লিটার ডিনেচার্ড স্পিরিট উৎপাদন করা হয়। মদের পাশাপাশি ভিনেগার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সার, চিনি ও গুড় উৎপাদন করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। বিপরীতে প্রতি বছর চিনি ইউনিটে বড় ধরনের লোকসান হয় কেরুর। চিনিতে লোকসানের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন জানান, প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নের জন্য ১০২ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। প্রকল্প শেষ হলে উৎপাদন প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় করা হবে। উৎপাদন সক্ষমতাও বেড়ে দ্বিগুণ হবে।

এদিকে কেরু অ্যান্ড কোম্পানির চিনিকলে ২০২২-২৩ মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে কেরুর কেন কেরিয়ারের ডোঙায় আখ ফেলে এই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়।

আখ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধনে চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান অপু বলেন, আখের উৎপাদন বাড়াতে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে এক দফায় আখের দাম বাড়ানো হয়েছে। আগামী মৌসুমে আবারও আখের দাম বাড়ানো হবে। এতে কৃষকদের মধ্যে আগ্রহ ফিরবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে যে পরিমাণ চিনির চাহিদা রয়েছে তা দেশের চিনিকলগুলো পূরণ করতে পারে না। তাই আমদানির ওপর নির্ভর থাকতে হয়। চলতি মৌসুমে ৫৩ কার্যদিবস মিল চালু রাখার লক্ষ্য রয়েছে। ৬২ হাজার টন আখ মাড়াই করে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ চিনি আহরণের হার ধরে তিন হাজার ৮৮৪ টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।