কাল থেকে তামাবিল সড়কে অনির্দিষ্টকালের ‘পরিবহন ধর্মঘট’

আগামীকাল থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে সব ধরনের পরিবহন চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি।

রবিবার (৯ জুলাই) বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালস্থ মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত জানান তারা। ধর্ঘটের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল কবির পলাশ।

তিনি বলেন- ‘গত শুক্রবার রাতে সিলেট-তামাবিল সড়কের দরবস্তে এক দুর্ঘটনায় ৫ জন মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ (রোববার) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এ সড়কে যাত্রীবাহী বাস চলতে দেননি জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ। তাঁর এ কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ও তাঁকে দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে আমরা এ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের এ সিদ্ধান্তের সাথে শ্রমিকরাও রয়েছেন। সব সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত এই রুটে পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের জৈন্তাপুর উপজেলার দরবস্ত এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সামনে বাস ও ইজিবাইকের (টমটম) সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন কয়েকজন।

এরপর শনিবার (৮ জুলাই) রাতে দরবস্ত বাজার মসজিদে সিলেটের বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিলেট-তামাবিল সড়কে অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের অপসারণ এবং ইতিপূর্বে সংগঠিত দুর্ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানান। আর এ শর্ত না মানলে এই রুটে বাস মিনিবাস চলতে না দেয়ার ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল আহমেদ বলেন, দরবস্ত বাজারে বাসচাপায় ৫ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় বাস মালিক সমিতি বা পরিবহন সংশ্লিষ্ট কেউই কোনো খোঁজখবরও নেননি তারা। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার রাতে বৃহত্তর জৈন্তাপুর ১৭ পরগণার সালিশ সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয় এবং সে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিলেট-তামাবিল সড়কে বাস-মিনিবাস চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন- রবিবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা রাস্তায় ছিলো এবং কয়েকটি বাস আটকেও রাখা হয়। তবে পরিবহণ নেতারা যদি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ না করেন এবং অদক্ষ চালক শ্রমিকদের বহাল রাখেন তবে সোমবার থেকে সিলেট-তামাবিল সড়কে আর বাস-মিনিবাস চলতে দেওয়া হবে না।