কারাবন্দীদের মনস্তত্বে ইতিবাচক উন্নয়নের লক্ষ্যে কারানাট্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইসরাফিল শাহীন। যেটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে গবেষণা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের এই অধ্যাপক নিজের তত্ত্বাবধানে ‘কারাবন্দীদের মনো-দৈহিক প্রতি-রূপায়ন ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পরিবেশনা শিল্পকলার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা’—শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছেন। যার মাধ্যমে বরিশাল, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি এবং রংপুর জেলার কারাগারগুলোতে সরেজমিনে উপস্থিত থেকে তথ্য-উপাত্ত ও সাক্ষাৎকার গ্রহণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশর প্রতিটি কারাগারে কারাবন্দীদের মনো-দৈহিক বিনোদন এবং ভিন্ন মাত্রার সাংস্কৃতিক প্রসারকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এ গবেষণা প্রকল্পটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র কারা তত্ত্বাবধায়ক প্রশান্ত কুমার বর্মন। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার মোঃ সায়েম অভিমত ব্যক্ত করেন, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ কারাবন্দীদের জন্য ভিন্নধর্মী সাংস্কৃতিক ধারা বিস্তার করতে পারবে।
বরিশাল বিভাগের তিনটি জেলা ও রংপুর জেলায় কারাবন্দীদের গবেষেণায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী অপূর্ব গোমস্তা ও সৈয়দ আল মেহেদী হাসান। এ প্রসঙ্গে বরিশাল বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক টিপু সুলতান বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কারাগার শব্দের পরিবর্তে ‘সংশোধনাগার’ শব্দটি ব্যবহার করার আহবান জানিয়েছেন। অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং কারাবন্দীদের মনো-দৈহিক বিনোদনের বিষয়ে এবং জেল পরবর্তী জীবন যেন সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে অতিবাহিত করতে পারে সেই উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণা প্রকল্পটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।’
কারাবন্দীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক গবেষণাটিকে আরও নান্দনিক রূপ দিতে একসঙ্গে কাজ করে যাবেন বলে জানিয়েছেন বরিশাল জেল সুপার রত্না রায়, পটুয়াখালী কারাগারের ডেপুটি জেলার মোঃ ইব্রাহীম, ঝালকাঠি সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহপার পারভীন, ঝালকাঠি সদর উপজেলার প্রধান মোঃ আসাদুজ্জামান, বরিশাল শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার হাসানুর মাকসুদ, পটুয়াখালীর কালচারাল অফিসার কামরুজ্জামান এবং ঝালকাঠির কালচারাল অফিসার মোঃ মামুন।
পরবর্তীধাপে বরগুনা, পিরোজপুর, ভোলা ও কুড়িগ্রাম জেলার কারাগার থেকে বন্দীদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে বলে জানান ড. ইসরাফিল শাহীন।
উল্লেখ্য, নান্দনিক এই চিন্তাধারাটি ২০২০-২১ অর্থ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ড. ইসরাফিল শাহীনের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়।