কারাগারে যাওয়ার ২৪ ঘন্টা পরেই জামিনে মুক্ত মন্ত্রীর জামাতা

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচন পূর্ব সহিংসতার মামলায় কারাগারে যাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই জামিন পেয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের জামাতা আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাহেলের জামিন আবেদন করলে জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম তাঁর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল নবীগঞ্জ শহরের হাসপাতাল সড়কের মৃত গোলাম রব্বানীর ছেলে এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের মেয়ের স্বামী।

কারাগার থেকে মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার জয়নাল আবেদীন ভুঁইয়া।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২১ সালের পৌর নির্বাচনের আগের দিন ১৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নবীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরীর লোকজনের উপর হামলা করেন। এক পর্যায়ে ছাবির আহমেদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই শফিক আহমেদ চৌধুরীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন রাহেল চৌধুরী। এতে শফিক চৌধুরীর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। দ্রুত তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়। দীর্ঘ চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। এ ঘটনায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ছাবির আহমেদ চৌধুরীর চাচাতো ভাই হাদিছ মিয়া চৌধুরী বাদী হয়ে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তদন্ত শেষে গত ৩০ মার্চ চার্জশীট প্রদান করে পিবিআই। চার্জশীট আদালতে গৃহীত হওয়ার পর আসামীদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়।

সোমবার (৪ জুলাই) মামলার ২নং আসামী গোলাম রসুল চৌধুরী রাহেল আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই মঙ্গলবার (৫ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রাহেলের জামিন আবেদন করেন তাঁর আইনজীবী। উভয় পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শেষে জেলা ও দায়রা জজ মো. হাসানুল ইসলাম রাহেলের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ।

বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট চৌধুরী আশরাফুল বারী নোমান বলেন- আদালত স্বাধীন, আদালত চাইলে যা কিছু করতে পারেন। তবে হবিগঞ্জের আদালত পাড়ায় আগেরদিন কারাগারে গিয়ে পরের দিন জামিন হওয়ার নজির নেই। তিনি বলেন- পূর্বের রেকর্ড ও আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী মিস কেইস ড্রপ করা হলে কমপক্ষে ৮দিন পর শুনানির তারিখ নির্ধারণ হয়। তবে এই মামলায় একটি অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা গেছে, যেদিন আসামী কারাগারে গেলেন সেইদিন মামলার নকল উত্তোলন করে মিসকেইস দাখিল করা হলো পরেদিন জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হলো এবং জামিনও দেয়া হলো।

আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু বলেন- আমরা আদালতে বিভিন্ন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছি তার মধ্যে অন্যতম হলো, সিআইডি প্রথমে মামলাটি মিথ্যা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছে,পরবর্তীতে দ্বিতীয়বার পিবিআই সত্য বলে প্রতিবেদন দেয়, এবং ঘটনাটি ঘটেছে রাতে কে বা কারা রাতের আধারে ঘটনাটি ঘটিয়েছে তা সঠিক ভাবে কেউ দেখেনি। সবকিছু বিবেচনা করে আদালত আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়ে জামিন মঞ্জুর করেছেন।