সিলেটের দক্ষিন সুরমার উপজেলার কামালবাজারে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে আল আমিন (২৫) নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় দক্ষিণ সুরমা পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে। রাত ১০টার দিকে অভিযোগ দায়েরের পর তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান তালুকদার।
গ্রেপ্তারকৃত যুবক কামালবাজার এলাকার শৈষ্যউরা গ্রামের মৃত আয়না মিয়ার ছেলে। সে ফরহাদপুর শেখরগাঁও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী দপ্তরি হিসেবে কর্মরত এবং এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম নারী (২০) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় প্রায় ৫/৬ বছর পূর্বে তাকে শৈষ্যউরা স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। বর্তমানে সে ওই স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী। আর আসামি আল আমিন উক্ত স্কুলের অস্থায়ী দপ্তরী হিসেবে কর্মরত। সে স্কুলে তার নিজের কাজগুলো ২০/৩০ টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ওই প্রতিবন্ধী নারীকে দিয়ে করাতো।
এর মাঝে গত ০৬ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভিকটিম নারীর চলাফেরা, আচরণ ও শারীরিক অবস্থার প্রতি সন্দেহ হওয়ায় সে ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞেস করলেও সে কোনকিছু বলেনি। পরে ডাক্তারী পরীক্ষা করালে জানা যায় সে ০৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এরপর পরিবারের সবার পীড়াপীড়িতে গত ১৫ জুলাই ওই প্রতিবন্ধী নারী জানায় যে, আনুমানিক ০৭ মাস পূর্বে আল আমিন বিদ্যালয় ছুটি হওয়ার পর তাকে একা পেয়ে পাইয়া কু-প্রস্তাব দেয়। এসময় সে রাজি না হলে আসামি আল আমিন তাকে ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদর্শন করে বিদ্যালয়ের সীমানা দেয়ালের ভিতরে স্কুল ভবনের পিছনে নিয়ে ওড়না দিয়া তার হাত-পা বেঁধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। একইভাবে সে একাধিকবার বিদ্যালয় ছুটির পর ওই প্রতিবন্ধী নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। কিন্তু ভয়ে সে কাউকে ধর্ষণের বিষয়টি বলে নি।
এ ব্যাপারে ভিকটিমের বোন মঙ্গলবার রাতে আল নামের ওই যুবককে আসামি করে দক্ষিণ সুরমা থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর অভিযুক্ত আল আমিনকে আটক করে পুলিশ।
দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান তালুকদার জানান, খবর পেয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হলে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বুধবার তাকে বিজ্ঞ আদালতে তোলা হবে।
এছাড়া ভিকটিম নারী সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ওসিসি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর সে ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না তা জানা যাবে বলে জানিয়েছেন ওসি কামরুল হাসান তালুকদার।