নিখোঁজের ৭ দিন পর সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের নিজ রাজাগঞ্জ গ্রামের মৃত তাহির আলীর পুত্র মোহাম্মদ আব্দুল আলীর (৬৫) অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (৫ মার্চ) রাতে উপজেলার রাজাগঞ্জ, ঝিঙ্গাবাড়ী ও হরিপুর-চিকনাগুল হাওরের মধ্যবর্তী নয়াবিল নামক খাল থেকে ভাসমান অবস্থায় মোহাম্মদ আব্দুল আলীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আব্দুল আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে আজ সোমবার (৬ মার্চ) থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ ও বৃদ্ধের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নিজ রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল আলী তার সিলেট শহরতলীর পীরেরবাজার বলাকা আবাসিক এলাকার বাসা থেকে ২য় স্ত্রী কুলসুমা বেগমকে সাথে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি জৈন্তাপুর উপজেলার উৎলারপাড় গ্রামে ওয়াজ মাহফিলে যান। রাতের খাওয়া শেষে শ্বশুরবাড়িতে রাত্রিযাপন করেন এবং ভোরে সকলের অগোচরে ঘুম থেকে উঠে জলসার বাজারে বসা দোকানে চলে যান। সেখানে আত্মীয়-স্বজনরা তাকে দেখে বাড়িতে যাওয়ার জন্য বলেন। কিন্তু আব্দুল আলী শ্বশুরবাড়িতে না গিয়ে সেখান থেকে নিখোঁজ হন। আব্দুল আলীকে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও না পেয়ে গত শনিবার (৪ মার্চ) জৈন্তাপুর মডেল থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
গতকাল রোববার বিকেলে নয়াবিল হাওরের একটি খালের পানিতে এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ দেখতে পান স্থানীয় কয়েকজন রাখাল। খবর পেয়ে দেখতে পেয়ে আব্দুল আলীর পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে অর্ধগলিত লাশটি আব্দুল আলীর বলে শনাক্ত করেন।
পরে কানাইঘাট থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমেদ ও ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুল আলীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাতেই সিওমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।
আব্দুল আলীর ১ম স্ত্রী বানেছা বেগম ও ২য় স্ত্রী কুলসুমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েক বছর থেকে মানসিক রোগ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন আব্দুল আলী। মাঝে-মধ্যেই হাওর এলাকা দিয়ে নিজ রাজাগঞ্জ গ্রাম থেকে পীরের বাজারের বাসায় যাতায়াত করতেন তিনি। কেউ তাকে হত্যা করতে পারে বলে তারা কাউকে সন্দেহ করছেন না।
কানাইঘাট থানার ওসি গোলাম দস্তগীর আহমেদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ২য় স্ত্রীর পিত্রালয় জৈন্তাপুরের উৎলারপাড় গ্রাম থেকে কাউকে না জানিয়ে আব্দুল আলী তার নিজ বাড়ি কানাইঘাটের রাজাগঞ্জ গ্রামে যাওয়ার জন্য হাওর এলাকা দিয়ে পায়ে হেঁটে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে খালের পানিতে পড়ে আব্দুল আলীর মৃত্যু হতে পারে। তার গায়ে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ওসি জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও অধিকতর পুলিশি তদন্তের মাধ্যমে এটি হত্যা না কি অপমৃত্যু সেটি জানা যাবে।