সিলেটের সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বুধবার (১৯ জুন) লোভা নদীর পানি কিছুটা কমলেও সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এদিকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ১৮ স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ (ডাইক) ভেঙে সুরমা নদীর পানি লোকালয়ে ঢুকার খবর পাওয়া গেছে। এতে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় কোথাও কোথাও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। পানি বৃদ্ধির কারণে ৮নং ঝিঙ্গাবাড়ী ও ৯নং রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
বন্যায় উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার অধিকাংশ গ্রামীন রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা শহরের সঙ্গে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে শ্রমজীবি মানুষরা কর্ম হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
এদিকে, বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনদের মধ্যে সরকারি ত্রাণ সামগ্রী সার্বক্ষণিকভাবে পৌঁছে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সরকারি ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া ১ হাজারের বেশি মানুষের মধ্যে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও চাল, ডাল, আলু, তৈল, মসলা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বন্যা দূর্গতদের মধ্যে।
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন বলেন, উপজেলার প্রায় ৭ হাজার ৬৪৯টি পরিবার এখনও পানিবন্দী রয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি ইউনিয়নে ২টি করে নৌকার মাধ্যমে পানিবন্দী এলাকার লোকজনদের নিরাপদ স্থানে ও আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হচ্ছে। ১২টি মেডিকেল টিম রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ট্যাগ অফিসার নিয়োজিত আছেন এবং জনপ্রতিনিধিদের সার্বক্ষণিকভাবে পানিবন্দী লোকজনদের খোঁজ-খবর নেয়াসহ তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে সম্প্রতি বন্যায় বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণ সামগ্রী প্রতিটি আশ্রয়কেন্দ্র ও পানিবন্দী এলাকায় বিতরণ করা হচ্ছে। পানি কমার সাথে সাথে ভাঙন কবলিত ডাইক মেরামতের কাজ শুরু হবে।