সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বড়গ্রাম মাইঞ্জরিতে টমেটো চাষীদের প্রায় ৫ লাখ টমেটো চারা উপড়ে ফেলা হয়েছে। ফলে স্থানীয় জনমনে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া। টমেটোর চারা উপড়ে ফেলায় চাষীরা প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, লোভাছড়া চা-বাগানের অর্ন্তভুক্ত বড়গ্রামের মাইঞ্জরিতে গত কয়েক বছর থেকে মৌসুমী কৃষকরা চা-বাগানের জায়গা পরিচর্যা করে টমেটো, লাউ, বরবটি, কচুসহ বিভিন্ন জাতের শাক-সবজির চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে সাবলম্বি হওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে মাইঞ্জরিতে প্রতিবছর কয়েক’শ বিঘা জমিতে স্থানীয় চাষীরা আগাম উন্নত জাতের টমেটোর বীজতলা পরিচর্যাসহ টমেটোর চাষাবাদ করে আসছেন। ফলে প্রতিবছরই টমেটো চাষের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন চাষীরা।
তবে সম্প্রতি উপজেলার সাউদগ্রাম পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত হাসমত আলীর ছেলে আমিন উদ্দিন, মৃত মনছব আলীর ছেলে জাকারিয়া আহমদ, মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে আমির উদ্দিন কটম আলী, আজাদুল আলমের ছেলে আফজাল হোসেন, আলকাছ উদ্দিনের ছেলে সোহেল আহমদ, ছইদ আহমদের ছেলে শাহিন আহমদ ও মৃত আজিজুর রহমানের ছেলে শাহাব উদ্দিন কালাইসহ আরও কয়েকজন চাষী আগাম আয়ের লক্ষে একাধিক বীজতলায় কয়েক লক্ষ উন্নত জাতের টমেটোর চারা উৎপাদন করেন। কিন্তু মাইঞ্জরিতে প্রায় ৩’শ বিঘা জমি সম্পূর্ণভাবে চাষাবাদ করে টমেটোর চারা রোপনের উপযোগী করে দু’এক দিনের মধ্যে চারা রোপনের কথা থাকলেও গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে চাষীদের একাধিক বীজতলা থেকে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টমেটোর চারা উপড়ে ফেলে ক্ষতিসাধন করে দুর্বৃত্তরা। পাশাপাশি ৩৬ হাজার পিস বাঁশের কঞ্চিও পুড়িয়ে দেয় তারা। পরে খবর পেয়ে কানাইঘাট উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় উপজেলার বড়গ্রামের মৃত আব্দুস সালামের ছেলে জলাল উদ্দিন ও তার ছেলে নজরুল ইসলাম নজু, জবরুল ইসলাম কুদরত, খায়রুল ইসলাম, ফখরুল ইসলামসহ তাদের সহযোগীদের দায়ী করে গত বুধবার কানাইঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা। পরদিন বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরও একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তারা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে চাষীরা বলেন, উন্মুক্তভাবে তাদের সবজি বাগান এলাকায় গরু-ছাগল চরানোতে নিষেধ করার কারনে প্রতিহিংসামূলকভাবে বড়গ্রামের জলাল উদ্দিন গংরা টমেটো বীজতলার লক্ষাধীক চারা উপড়ে ফেলেন। এসময় আক্ষেপ করে তারা বলেন, এবছর আর আগাম টমেটো চাষ করা যাবে না। এমন অমানবিক কর্মকাণ্ডের ফলে প্রায় কোটি টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের। চাষীরা আরও বলেন, কয়েকদিন আগে জলাল উদ্দিন ও তার ছেলেরা আমাদের গ্রামের অপর এক চাষীর লাউ বাগান কেটে ফেলে দিয়ে ক্ষতিসাধন করে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, রাতের আঁধারে এভাবে লুকিয়ে বীজতলা থেকে লক্ষ লক্ষ চারা উপড়ে ফেলাসহ যারা টমেটো চাষীদের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এ ব্যপারে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ‘