করোনার ঊর্ধ্বগতির মধ্যে আবার মসজিদসহ সব উপাসনালয়ে উপস্থিতির ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলার অনুরোধ করা হয়েছে। শিশু, বৃদ্ধ, যে কোনো অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিতদের জামাতে উপস্থিত না হওয়ার নির্দেশ জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে সবাইকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক পরে আসতে বলা হয়েছে। মসজিদে পর্যাপ্ত সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতেও বলা হয়েছে।
করোনার চতুর্থ ঢেউ দরজায় কড়া নারার অবস্থার মধ্যে মঙ্গলবার (২৮ জুন) সাত দফা নির্দেশনায় এ কথা বলা হয়।
গত ১৩ দিন ধরে নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি। গত কয়েক দিন ধরে তা ১৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে এবং দিনে শনাক্ত দুই হাজারের বেশ এখন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী পর পর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলে করোনার পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। সেই হিসেবে আর একদিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের বেশি হলেই চতুর্থ ঢেউয়ে দেশের পদার্পণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
করোনার রোগী ব্যাপক হারে বাড়লেও এবার মৃত্যুর হার অবশ্য কম। গত চার মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চ তিন জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে চলতি সপ্তাহে। আর রোগী বাড়লেও হাসপাতালে ভিড় এবার তুলনামূলক কম, রোগীদের মধ্যে জটিলতাও কম।
এই পরিস্থিতিতে করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে তেমন ভাবান্তর নেই। মাস্ক পরাসহ যেসব স্বাস্থ্য সচেতনতার কথা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, সেগুলো মানতে অনীহার বিষয়টি স্পষ্ট।
ধর্ম মন্ত্রণালয় বলছে, ভাইরাস প্রাদুর্ভাবজনিত কারণে সারাদেশে করোনায় আক্রান্তের হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের বিধি-নিষেধ আরোপ করে কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং মসজিদে আবশ্যিকভাবে নিম্নবর্ণিত শর্তসমূহ পালনের জন্য অনুরোধ করছে।
নির্দেশের মধ্যে বলা হয়েছে, মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে এবং মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসতে হবে।
মসজিদে আগতদের প্রত্যেককে নিজ নিজ বাসা থেকে ওযু করে, সুন্নাত নামাজ ঘরে আদায় করে মসজিদে আসতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ওজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতেও বলা হয়েছে।
মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না জানিয়ে নির্দেশে বলা হয়েছে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদ জীবানুনাশক দ্বারা পরিস্কার করতে হবে।
অন্যান্য নির্দেশের মধ্যে রয়েছে, মুসল্লিরা সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন, কাতারে নামাজে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে, মসজিদের ওযুখানায় সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে এবং মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।