সিলেটে জ্বালানি তেল ডিজেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। রেলওয়ের ইঞ্জিন ও জ্বালানিবাহী ওয়াগন সংকটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে। আবার সেচ মৌসুমের কারণে জ্বালানি তেলের চাহিদাও বেড়েছে। বাড়তি চাহিদা ও ওয়াগন না আসার কারণে সংকট তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এই সংকট অব্যাহত থাকলে অনেক পেট্রোল পাম্প বন্ধ হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন পেট্রোল পাম্প মালিকরা।
গত ডিসেম্বর থেকে এ সংকট চলে এলেও এই সপ্তাহে এসে তা চরম আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় ডিপোগুলোতেও ডিজেলের মজুত ফুরিয়ে গেছে। পেট্রোল পাম্পগুলোতে পর্যাপ্ত ডিজেল না থাকার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ভারি যানবাহন চালকদের সঙ্গে পাম্প কর্মচারীদের ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেলওয়ের ইঞ্জিন সংকটের কারণে চট্টগ্রাম থেকে রেলের তেলবাহী ওয়াগন সিলেটে আসতে পারছে না। প্রতি সপ্তাহে যেখানে ৫টি ডিজেলবাহী ওয়াগন আসার কথা, সেখানে সপ্তাহে আসছে দুটি করে। গত শুক্রবার একটি তেলবাহী ওয়াগন আসার কথা থাকলেও আসেনি।
বোরো মৌসুমে সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রতি সপ্তাহে ডিজেলের চাহিদা রয়েছে ২৭ লাখ লিটার। অথচ এর বিপরীতে মাত্র ১০ থেকে ১২ লাখ লিটার আসছে।
এটি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন সিলেটের সমন্বয়ক ও মেঘনা পেট্রোলিয়ামের জেলা মার্কেটিং অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ৩ দিন ধরে রেলওয়ের বেশ কয়েকটি ইঞ্জিন বিশ্ব ইজতেমায় ব্যবহৃত হওয়ার কারণে এই সংকট আরও তীব্র হয়েছে।
এদিকে, ডিজেল সংকটের কারণে পেট্রোল পাম্প মালিকদের পাশাপাশি চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। বোরো চাষের মৌসুমে সেচের জন্য ডিজেল না পেয়ে ফসল উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় আছেন অনেকে। ডিজেল সংকট দেখা দেওয়ায় যানবাহন চলাচল, সেচ পাম্প ও জেনারেটর চালানোর ক্ষেত্রে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে।
এ বিষয়ে পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় মহাসচিব ও সিলেট বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমদ চৌধুরী বলেন, সিলেটে ডিজেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদার অর্ধেক ডিজেলও এখন পাওয়া যায় না। ফলে ব্যবসা পরিচালনা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। দিন দিন এই সংকট আরও তীব্র হচ্ছে। যার প্রভাব পড়বে বোরো চাষে ও মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, সপ্তাহে যেখানে প্রতিদিন একটি করে তেলবাহী লরি চট্টগ্রাম থেকে আসার কথা, সেখানে সপ্তাহে মাত্র একটি আসছে। তাই জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা উপায়ান্তর না পেয়ে ভৈরব থেকে জ্বালানি তেল আনছেন। এতে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।