চাকুরী স্থায়ীকরণ, বকেয়াসহ বেতন-ভাতা নিয়মিত করণ ও কর্মস্থলে কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করণের ৩ দাফা দাবিতে এবার আন্দোলনে নেমেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিমেবি কর্মচারী পরিষদ’ এ কর্মসূচীর ডাক দেয়। অবিলম্বে তাদের দাবী মানা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে এ কর্মসূচী শুরু হয়ে চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।
এর আগে একই দাবিতে গত রবি ও সোমবার ‘গণসাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি’ পালন করেন আন্দোলনকারীরা। দুইদিনে স্বাক্ষর দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ৮৩ জন কর্মচারী।
আন্দোলনকারীরা জানান, প্রায় এক বছর যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। নানা জটিলতার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে আছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দু’দফায় জনবল নিয়োগের জন্য সার্কুলার আবেদন করলেও নানা জটিলতায় নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেনি।
দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ডাঃ এ এইচ এম এনায়েত হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করলেও তিনি কেবল আশ্বস্তই করে যাচ্ছেন।
এদিকে দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় ক্ষোভে ফুঁসেছে কর্মরতা। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই তারা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সিমেবি কর্মচারী পরিষদের সদস্য আব্দুস সামাদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ১১ মাস ধরে বিনা বেতনে কাজ করে যাচ্ছি। একটি দিনের জন্যও আমরা অফিসের কোনও কাজ বন্ধ রাখিনি। অথচ আজ ১১টি মাস ধরে আমরা বেতন-ভাতা বঞ্চিত। পরিবার বাচ্চাদের নিয়ে বড় কষ্টে আছি। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিকবার ভাইস চ্যান্সেলর স্যারের সাথে দেখাও করেছি। কিন্তু তিনি কেবল আশ্বস্ত করা ছাড়া এতোদিনে কার্যত কোন সমাধান দিতে পারেননি। আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেঁকে গেছ। তাই বাধ্য হয়েই আমরা কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছি।
সিমেবি কর্মচারী পরিষদের সদস্য সচিব নাদিম সীমান্ত জানান, ৩ দফা দাবি আদায়ে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচির ডাকা দেওয়া হবে বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
৩ দফা দাবি হলো- নিঃশর্তে সকল পর্যায়ের কর্মচারীদের চাকুরী স্থায়ী করণ করতে হবে। প্রায় ১ বছর যাবত বেতন বন্ধ থাকায় কর্মচারীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তাই অনতিবিলম্বে সকল বকেয়া বেতন-ভাতাদি পরিশোধসহ বেতন-ভাতা নিয়মিত করণ করতে হবে। কর্মস্থলে কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবিলম্বে নিজস্ব স্থায়ী জায়গায় স্থানান্তরের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।