এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকা থেকে বাদ পাকিস্তান, কালো তালিকায় মিয়ানমার

অবশেষে চার বছর পর, মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের নজরদারি সংস্থা ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) এর ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হলো পাকিস্তানের নাম। এফএটিএফ বলেছে, পাকিস্তান অর্থ পাচার বিরোধী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে এবং প্রযুক্তিগত ত্রুটিগুলি সমাধান করে সন্ত্রাসবাদে তহবিল জোগানের মোকাবিলার লক্ষে তাদের সুপারিশ মেনে কাজ করেছে। ১৮ অক্টোবর থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত প্যারিসে আয়োজিত এফএটিএফ-এর বৈঠকেই পাকিস্তানকে ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকায় থাকার কারণে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা এডিবি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছিল না। একই সময়ে মুদ্রাস্ফীতি এবং পরিকাঠামোগত সংকট পাকিস্তানের সমস্যা বাড়িয়েছিল। এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকা থেকে বেরিয়ে আসায়, এই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির ইসলামাবাদকে আর্থিক সহায়তা দিতে আর বাধা রইল না।

স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। টুইট করে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এফএটিএফ-এর ধূসর তালিকা মুক্ত হওয়া আমাদের কয়েক বছরের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং স্থিতিশীল প্রচেষ্টারই প্রমাণ। আমি আমাদের অসামরিক এবং সামরিক নেতৃত্বের পাশাপাশি সমস্ত প্রতিষ্ঠানকে অভিনন্দন জানাতে চাই। তাদের কঠোর পরিশ্রম আজকের সাফল্য এনে দিয়েছে। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।

এদিকে, এফএটিএফের অন্যতম সদস্য দেশ ভারত অবশ্য আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এফএটিএফ-এর বৈঠকে ভারত জানিয়েছে, ধূসর তালিকাভুক্ত হওয়ার পরও সন্ত্রাসবাদীদের পছন্দের আশ্রয়স্থল হিসেবে থেকে গিয়েছে পাকিস্তান। শুধু নিরাপদ আশ্রয়দানই নয়, ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে তহবিলের জোগানও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ভারত।

শুধু পাকিস্তান নয়, সাম্প্রতিক পর্যালোচনার পর লাটিন আমেরিকার দেশ নিকারাগুয়াকেও ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

এদিকে সামরিক শাসনের আওতায় থাকা মিয়ানমারকে ধূসর তালিকা থেকে আরও গুরুতর, কালো তালিকাভুক্ত করেছে এফএটিএফ । এছাড়াও সদস্যদের মিয়ানমারে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও লেনদেনে বর্ধিত যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের কারণে রাশিয়াকে সাইডলাইন করা হয়েছে।

সূত্র: এএফপি, ডন