উপকূলে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’

প্রতীকি ছবি

কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় ‘হামুন’। এ সময় ঝড়ের তোড়ে গাছপালা ও বিভিন্ন সাইনবোর্ডসহ নানা সরঞ্জাম উপড়ে গিয়ে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে ঘূর্ণিঝড়টির উপকূল অতিক্রম শুরু হয়।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় হামুন সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে কক্সবাজার উপকূলে পৌঁছে। গতিপথ পরিবর্তন করেছে। এটি ভোলার ওপর দিয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের অতিক্রমের কথা ছিল। তবে গতিপথ পাল্টে ঝড়টি কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্র উপকূলের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৬ নম্বরের পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদসংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবে বর্তমানে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রবৃষ্টি হচ্ছে। সাগরে জোয়ার থাকায় চার থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

ঘূর্ণিঝড় হামুনের আঘাতের সতর্কতা হিসেবে কক্সবাজার বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

কক্সবাজারের সহকারী আবহাওয়াবিদ ইমাম উদ্দিন জানান, ‘হামুন’ আরও দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় সন্ধ্যায়। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পরে ঝড়ো বাতাসসহ কক্সবাজারের উপকূল অতিক্রম শুরু করে এটি। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে সমুদ্রবন্দরে ৭ নম্বর ও মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপৎসংকেত এখনো বহাল রয়েছে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ঘূর্ণিঝড় হামুনের অগ্রভাগ কক্সবাজারসহ উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে বলে খবর পেয়েছি। শহরের মতো উপকূলের গ্রামের অনেক কাঁচা ঘরবাড়ির চালা, গাছপালা উপড়ে পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর পেয়েছি। পুরো অতিক্রম করা শেষ হলে বুধবার দিনের বেলা ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সঠিক জানা যাবে।

এছাড়া, উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এর প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।