ইয়ুথ ওয়াটার ফেলোশিপ এর জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থী মো. সরোয়ার জামান। তিনি বিশ্বিবদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স (সিইপি) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
সোমবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফেলোশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী সরোয়ার জামানের মেন্টর সিইপি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ।
মেন্টর অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ বলেন, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু এবং জলজ প্রানীর জীবন বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকের অত্যধিক ব্যবহার ও অপব্যবহারের কারণে নদী, হ্রদ থেকে শুরু করে সব রকমের জলজ পরিবেশে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
গবেষণার বিষয়ে তিনি বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ট্রান্সফারের মাধ্যমে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে, প্রচলিত পানি পরিশোধন নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ট্রান্সফার বন্ধ হয় না।
তিনি আরো বলেন, আমাদের গবেষণায় আমরা অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করা এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী জিন ট্রান্সফার বন্ধ করার জন্য পালস ইলেক্ট্রিক ফিল্ড প্রয়োগ করব। এতে হাই ভোল্টেজ ইলেক্ট্রিসিটি দিয়ে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের পাশাপাশি জিন ট্রান্সফার রোধ করব।
নিজের অনুভূতি জানিয়ে মো. সরোয়ার জামান বলেন, ফেলোশিপটি আমার জন্য অনেক বড় অর্জন। এই ফেলোশিপ পাওয়ার পেছনে সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান করেছেন ইউসুফ স্যার। উনার সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনা না থাকলে হয়তো এ পর্যন্ত আসা সম্ভব হত না। এজন্য স্যারের প্রতি অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, গত জুন মাসে আমি আবেদন করি। জানতে পারি এ ফেলোশিপের জন্য ১৯১ শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন। পরে তাদের সাক্ষাৎকার ও বাছাই প্রক্রিয়া শেষে ৭ জনকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হয়। সেখানে আমিও ফেলোশিপের জন্য মনোনীত হই। তারা আগামী ছয় মাস (জুলাই ২০২২ থেকে ডিসেম্বর ২০২২) এ ফেলোশিপ সাপোর্ট দিবেন।
জানা যায়, পানি নিয়ে তরুণদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে ইয়ুথ ওয়াটার ফেলোশিপ প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়েছে। পানি বিষয়ক সমস্যা সমাধান ও টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ৬ (এসডিজি-৬) এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অন্যতম লক্ষ্য এ ফেলোশিপ প্রোগ্রামের। হাউজ অব ভলান্টিয়ারস ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, এনভায়রনমেন্টাল সাস্টেইনিবিলিটি ইন টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজের (এস্টেক্স বুয়েট) যৌথ উদ্যোগে এ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হচ্ছে। এতে সহায়তা করছে এসএনভি নেদারল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে এসটেক্স’র সহায়তায় দেশে সর্বপ্রথম ইয়ুথ ওয়াটার ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় এবার এইচওভি, এস্টেক্স-বুয়েট এবং এসএনভি’র সহযোগিতায় দ্বিতীয়বারের মতো প্রোগ্রামটি আয়োজন করা হয়েছে।