জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমশ বেড়েই চলেছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করছে মানব জীবনে। বাড়তি তাপমাত্রার কারণে প্রাণ হারাচ্ছেন বহু মানুষ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে চলতি বছর কেবল ইউরোপেই প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ। ।
সোমবার (৭ নভেম্বর) বার্তাসংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে গরম আবহাওয়ার কারণে ইউরোপে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন। এমনকি বাড়তি তাপমাত্রার কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে স্পেন এবং জার্মানি রয়েছে।
এএফপি বলছে, রেকর্ড রাখা শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের জুন থেকে আগস্ট, এই তিন মাস ছিলো ইউরোপে সবচেয়ে উষ্ণ এবং ব্যতিক্রমীভাবে উচ্চ তাপমাত্রার কারণে চলতি বছর এই মহাদেশে সবচেয়ে খারাপ খরা দেখা দিয়েছে।
ডব্লিউএইচও’র ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, এখন পর্যন্ত জমা দেয়া দেশের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে, অনুমান করা হচ্ছে- ২০২২ সালে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ বিশেষভাবে বাড়তি তাপের কারণে মারা গেছেন।
তিনি জানান, গ্রীষ্মের ৩ মাসে স্পেনে প্রায় ৪ হাজার, পর্তুগালে এক হাজারেরও বেশি, যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার ২০০ জনেরও বেশি এবং জার্মানিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর দেশগুলোর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মিশরে জাতিসংঘের জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনে এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে ডব্লিউএইচও বলেছে, আরও বেশি সংখ্যক দেশ তাপের কারণে অতিরিক্ত মৃত্যুর তথ্য রিপোর্ট করায় প্রাণহানির এই সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
এএফপি বলছে, ঐতিহাসিক এই শুষ্ক মৌসুমে রেকর্ড দাবানল আরও বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপে ফসল উৎপাদন কমে গেছে এবং মহাদেশের পাওয়ার গ্রিডে মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে।
ডব্লিউএইচও বলছে, বাড়তি তাপের ফলে সৃষ্ট চাপে যখন শরীর নিজেকে ঠান্ডা করতে পারে না তখন একজন ব্যক্তি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায় এবং এটিই ইউরোপীয় অঞ্চলে আবহাওয়া সংক্রান্ত মৃত্যুর প্রধান কারণ।
সংস্থাটি আরও জানায়, ক্রমবর্ধমান তাপপ্রবাহ এবং আবহাওয়ার অন্যান্য চরম আচরণ আগামী দশকগুলোতে মানুষকে আরও বেশি রোগ ও মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে, যদি না এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হয়। যারা দীর্ঘস্থায়ী হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট এবং ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের জন্য চরম তাপমাত্রা বিপদের কারণ হতে পারে।