আমনের পর ইরি-বোরোতে কৃষকের নতুন স্বপ্ন

বীজতলা তৈরির কাজ করছেন এক কৃষক

সিলেটের জৈন্তাপুরে আমনের পর এবার ইরি-বোরোতে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা। সেচ সুবিধা প্রাপ্ত জমিগুলোতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যে বীজতলা তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষককেরা। ভালো ফলনের আশায় নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন তারা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস, চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে ৫ হাজার ৬৫০ হেক্টর আবাদী জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে নিজপাট ইউনিয়নে ৫৫০ হেক্টর জমি, জৈন্তাপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ১৩০ হেক্টর, চারিকাঠা ইউনিয়নে ৪২১ হেক্টর, দরবস্ত ইউনিয়নে ১ হাজার ২১০ হেক্টর, ফতেহপুর ইউনিয়নে ১ হাজার ২৬০ হেক্টর ও চিকনাগুল ইউনিয়নে ১ হাজার ৮০ হেক্টর।

কৃষি অফিস আরও জানায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৮ হাজার ৩০০ জন কৃষক ইরি-বোরো ধান চাষের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতোমধ্যে বীজতলা তৈরির কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষের পথে। পাশাপাশি উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২৩০ জন কৃষককে প্রদর্শনীও দেয়া হয়েছে। সেই সাথে ৩ হাজার ৪০০ জন কৃষককে প্রণোদনার আওতায় সার, বীজ ও কীটনাশক বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া ২৬০ জন কৃষককে শুধুমাত্র ফলোআপ বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামের প্রদর্শনী প্রাপ্ত কৃষক আব্দুল খালিক দুলাল বলেন, চলতি মৌসুমে ৫০ শতক জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রী ধান-৯২ এর বীজতলা তৈরি করেছেন। ইতোমধ্যে প্রণোদনার আওতায় সার ও বীজ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, জৈন্তাপুর উপজেলায় ৪ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষ করা হবে। জাতগুলো হলো ব্রী-ধান ২৮, ২৯, ৪৫, ৫৮, ৬৪, ৭৪, ৮৯, ৯২, ১০০, ১০৩ ও বিনা-২৫ অন্যতম। হাইব্রিড প্রজাতির মধ্যে রয়েছে এসএল-৮এইচ, ময়না, টিয়া, ব্রী- হাইব্রিড-৮ অন্যতম। এ বছর ১ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড প্রজাতির ধান চাষ হবে। তাছাড়া পুরো উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান চাষ করা হবে। তার মধ্যে অন্যতম প্রজাতি হলো খৈয়া ও আয়না মিয়া।

এ বিষয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, চলতি মৌসুমে ‘ফ্লাড রিকনস্ট্রাকশন ইমারজেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট ফ্রীপ’ প্রকল্পের আওতায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জৈন্তাপুরের বাস্তবায়নে কৃষক পর্যায়ে বোরো ধানের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রকল্পের আওতায় উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়নে সেচ  প্রকল্প চালু করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে উপজেলার আমন ধানের মত ইরি-বোরো ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।