হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্তের সময় শিক্ষকদের দু’গ্রপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে এগারোটায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই ঘটনাটি ঘটে। এ সময় শিক্ষকদের একটি অংশ ‘শিক্ষা কর্মকর্তার বদলি চাই’ বলে শ্লোগান দিতে থাকে।
জানা যায়, চলতি বছরের ১ এপ্রিল উপজেলার ১০২ জন প্রাথমিক শিক্ষকদের পক্ষে পৌরসভার মিজাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিউটন চক্রবর্তী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ দেন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে দেয়া অভিযোগপত্রে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হকের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ঋণ ফরমে স্বাক্ষর আনতে গিয়ে গালিগালাজ, ইংরেজি প্রশিক্ষণে নিজের পছন্দের শিক্ষকের নাম প্রেরণ, বিদ্যালয়ের ক্লাস বন্ধ রেখে নিজের পছন্দের কয়েকজন শিক্ষককে অফিসে এনে প্রতিনিয়ত বসিয়ে রাখাসহ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে সুসম্পর্কের ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন শিক্ষককে হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
অভিযোগটি আমলে নিয়ে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিলেট মারুফ আহমেদ চৌধুরী ১৯ সেপ্টেম্বর লিখিতভাবে তদন্তের তারিখ নির্ধারণ করেন।
এরই প্রেক্ষিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিলেট (তদন্তের অতিরিক্ত দায়িত্ব পাওয়া) মারুফ আহমেদ চৌধুরী বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) আজমিরীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে তদন্তে আসেন। তদন্তে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় শিক্ষকদের দুই গ্রুপের দুই শতাধিক শিক্ষক বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রুপ নেয়।
হট্টগোল শোনে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমীসহ কর্মকর্তারা এসে বিক্ষুব্দ শিক্ষকদের শান্ত করেন।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান- ‘কয়েকজন শিক্ষক নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুবিধা নিতে না পারায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত কর্মকর্তা লিখিতভাবে আমাকে জানিয়েছেন সাক্ষ্য প্রমানসহ উপস্থিত থাকতে। তদন্ত কার্যক্রম চলমান অবস্থায় হঠাৎ এই হট্টগোল শুরু হয়।’
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান বলেন- ‘আজকে যে তদন্ত হবে এ বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের জানাননি, হট্টগোল শোনে আমি ও ইউএনও মহোদয় দৌড়ে নিচে গিয়ে তাদের শান্ত করি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা সালেহা সুমী জানান- ‘হট্টগোল শোনে নিচে গিয়ে তদন্তের বিষয়টি নজরে আসে আমার। এর আগে তদন্তের বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা আমাদের জানাননি। আমি নীচে গিয়ে তদন্তের সংশ্লিষ্ট ছাড়া যে শিক্ষকরা ছিলেন উনাদের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠিয়েছি। এবিষয়ে আমরা বিভাগীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো।’