আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভোট চুরির কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নির্বাচন যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুষ্ঠু হয়, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়, তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। সর্বশেষ রংপুর সিটি নির্বাচন, ছয়টি উপনির্বাচনসহ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি।
সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে কাতার সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে উন্নয়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, এরপর আর কেউ নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা উত্থাপন করার সুযোগ পাবে না। কারণ আমরা ক্ষমতায় থাকলেও মানুষের ভোটের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছি। কাজেই সেই ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব বলেই মনে করি। আর সেভাবেই দেশে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে এখন আর কেউ দুর্ভিক্ষের দেশ মনে করে না। আমরা একটা জায়গায় নিয়ে আসতে পেরেছি। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের জন্য কাজ করে। ২০০৬-২০২২ সাল পর্যন্ত একটা তুলনামূলক চিত্র আমি আল জাজিরায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে যে উন্নয়ন হয় তা আমরা প্রমাণ করেছি। এরজন্য অনেক ধৈর্য্যের দরকার। এ জন্য অনেক কথাও শুনতে হয়। এত কিছু করার পরও আমাদের শুনতে হয় ‘কিছুই করি নাই।’ তবে এটার জন্য বলতে হয় জনগণই মূল শক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে, ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে আমি আশা করি এটা কেউ করতে পারবে না। এটা ঠিক যে সামনে নির্বাচন। এক কোটি ২০ লাখ ভূয়া ভোটার দিয়ে বিএনপি ভোটার তালিকা করেছিল। এখন আর সেটা কেউ করতে পারবে না। আমরা ছবিসহ ভোটার তালিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫ পরবর্তী অনেক নির্বাচন আমরা দেখেছি। জিয়াউর রহমানের আমলে হ্যাঁ-না ভোট হয়েছে, না বাক্সে কোনো ভোট নেই, পাওয়া যায় না। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দেখেছি কীভাবে কারচুপি করা হয়েছে। জেনারেল এরশাদের আমলে ৮৬ সালের নির্বাচনে আমরা অংশ নিয়েছিলাম। সেই নির্বাচনের ফলাফল ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ রেখে নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করা হয়। তাও আমরা দেখেছি।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ২০০৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রহসেনের একতরফা ভোট করেছিলেন। কিন্ত ভোট চুরি করলে, দেশের মানুষ তাদের ছেড়ে দেয়নি। ভোট চুরির অপরাধে দেশের জনগণ আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে মাত্র দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। তারপরে নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা ক্ষমতায় এলাম।
তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আবার একটা চক্রান্ত ছিল গ্যাস বিক্রি নিয়ে। কাজেই সেটা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত জোট এলো ক্ষমতায়। এসে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিসহ নানারকম অপকর্ম করে, দেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করল যে ইমার্জেন্সি এলো। সেই অবস্থা থেকে দেশকে মুক্ত করে, আমরা দেশে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছি।