অবশেষে প্রশাসনের সহায়তায় হচ্ছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে খাসি (খাসিয়া) সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’। মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় আগামী ২৩ নভেম্বর যথাযোগ্য মর্যাদায় উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে, গত ১৮ নভেম্বর অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিলেট ভয়েসসহ বিভিন্ন পত্রিকায়- অর্থাভাবে হচ্ছে না ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ এই শিরোনামে সংবাদ প্রচারিত হলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে।
জানা যায়, প্রতিবছর ২৩ নভেম্বর কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জির খেলার মাঠে খাসি সম্প্রদায়ের বর্ষ বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে আসছে খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল। এ বছর পানের ব্যবসা মন্দার কারণে ও আর্থিক সংকট থাকায় ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ উৎসব না করার ঘোষণা দেয় খাসি সোশ্যাল কাউন্সিল।
খাসিদের আয়ের ও জীবিকার প্রধান উৎস পান চাষ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানার পর সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে জানিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলা হয়।
জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে তারা এ উৎসবের আয়োজন করে আসছে। ‘সেং কুটস্নেম উৎসবের দিন সবাই মিলে ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, নিজস্ব সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, ঐতিহ্যবাহী খাবারের সাথে আনন্দে নিজেদের সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করেন।
অনুষ্ঠানস্থলের পুরো মাঠ জুড়ে মেলা বসে। বিভিন্ন স্টলে খাসিয়ারা পোশাক, পান, তীর, ধনুক, বাঁশ-বেতের তৈরি জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন। এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির মানুষ অংশ নেয়। খাসিয়াদের নিজস্ব সংস্কৃতির পরিচয় পেতে দেশ–বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।
খাসিয়ারা জানান, অবশেষে বর্ষবিদায় ও নতুন বছরকে বরণের অনুষ্ঠানটি হবে শুনে তাঁরা অনেক খুশি।
খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুছিয়াং বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের অনুষ্ঠানের ব্যয় বহন করা হবে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে উৎসবের আয়োজন করার জন্য বলা হয়েছে। এই উৎসবে সিলেট বিভাগের প্রায় ৭০টি খাসিয়া পুঞ্জির এসে অংশ নেন। দেশ–বিদেশের পর্যটকেরাও এই অনুষ্ঠানে আসেন।’
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়নাল আবেদীন বলেন, খাসিদের বর্ষবিদায় ও নতুন বছরকে বরণের ঐতিহ্যবাহী উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ প্রশাসনের আর্থিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হবে।