‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ’ উপলক্ষে সিলেটে আলোচনা সভা

কর অঞ্চল-সিলেটের কর কমিশনার সৈয়দ জাকির হোসেন বলেছেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুন্থানের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে সেখানে জাতীয় রাজস্ব তথা ভ্যাট এর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। শহীদদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এ সাফল্য ও সম্মানকে বহির্বিশ্বে সমীহে নিতে হবে। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ব্যতীত সেটা সম্ভব নয়। দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করতে সর্বস্তরে কর সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে। প্রতিবছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাষ্ট্রকে যে পরিমাণ রাজস্ব যোগান দেয় তার বেশিরভাগই ভ্যাট হতে আসে। বৈদেশিক সাহায্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে ভ্যাটের কোন বিকল্প নেই। তাই বিপ্লবোত্তর এই বাংলাদেশে প্রকৃত অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে সম্মানিত করদাতাগণকে যথাযথ ভ্যাট প্রদান করতে হবে।

আগস্ট অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংস্কারের পরিবেশ বিরাজ করছে তারই আলোকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নগরীর উপশহরে হোটেল রোজ ভিউ এর হলরুমে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের উদ্যোগে ‘ভ্যাট দিবস’ এবং ১০-১৫ ডিসেম্বর ‘ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনার প্রথমেই জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহীদগণের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। ‘ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবারের ভ্যাট দিবস পালিত হয়।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ, সেক্টর সদর দপ্তর, সিলেটের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ সাইফুর ইসলাম চৌধুরী (বিজিবিএম), দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ফয়েজ হাসান ফেরদৌস।

বিশেষ অতিথিগণ তাঁদের বক্তব্যে জাতীয় অর্থনীতিতে ভ্যাটের গুরুত্ব এবং প্রকৃত ভ্যাট আদায়ের জন্য সকল পক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট এর কমিশনার মো. তাসনিমুর রহমান। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে প্রয়োজনীয় রাজস্ব যোগানের অন্যতম প্রধান উৎস হবে সেবাধর্মী ভ্যাট ব্যবস্থা। জনগণকে ভ্যাট প্রদানে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে বিদ্যমান ভ্যাট কাঠামোকে সহজে ব্যবহার উপযোগী করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি বাংলাদেশে ভ্যাট ব্যবস্থাপনায় অটোমেশনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অনলাইনে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন, ভ্যাট রিটার্ন, কর পরিশোধ, হিসাব সংরক্ষণসহ আধুনিক সুবিধা গ্রহণের জন্য তিনি স্টেকহোল্ডারদেরকে অনুরোধ করেন।

তিনি আরো বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট ভ্যাট আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এবারের ভ্যাট দিবসের মূল প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে তিনি সকল পর্যায়ের করদাতাগণকে যথাযথ ভ্যাট প্রদানের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট এর উদ্যোগে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার পাশাপাশি স্থানীয় ক্যাবল অপারেটর ও বিল বোর্ডের মাধ্যমে ভ্যাট সপ্তাহের সচেতনতামূলক টিভিসি নিয়মিত সম্প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরণের সচেতনতামূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সকল অংশীজনের সহযোগিতায় এ অর্থবছরের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে বলে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেট আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, সিলেটের অতিরিক্ত কমিশনার-২ রেজভী আহম্মেদ ও কী-নোট পেপার উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত কমিশনার-১ খন্দকার নাজমুল হক। এছাড়াও আলোচনা সভায় সম্মানিত অংশীদারগণ, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।