বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় কাজে যোগ দেয়নি মৌলভীবাজারের আটটি বাগানের চা শ্রমিকরা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় কাজে যোগ দেয়নি ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ফাঁড়িসহ আটটি বাগানের চা শ্রমিকরা।

শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ন্যাশনাল টি কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুর রহমান মুন্না।বকেয়া মজুরি ও বিভিন্ন দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসের প্রায় তিন মাস বন্ধের পর চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গত বুধবার (৪ ডিসেম্বর) বকেয়া মজুরি পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার থেকে কাজে যোগ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায়নি। ফলে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেয়া সম্ভব হয়নি।

গত ১ ডিসেম্বর মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল শ্রম অধিদফতর কার্যালয়ে চা শ্রমিকদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির কর্তৃপক্ষের যৌথ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল টি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহমুদ হাসান, এনটিসির মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক, ডিডিএল নাহিদুল ইসলাম এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরিসহ অনেকে। এ বৈঠকে ৫ ডিসেম্বর কাজে যোগ দেয়ার প্রথম দিন শ্রমিকদের দু’ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি দেয়া, মাসিক বেতনধারী শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দেয়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন নিয়মিত পরিশোধ, বাগানের কর্মচারীদের ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে এক মাসের বেতন দেয়া, বাগান বন্ধের দিনগুলোতে চা শ্রমিকদের রেশন কর্তন না করা, বোনাস ও বার্ষিক ছুটির দিন গণনার ক্ষেত্রে বাগান বন্ধের দিনগুলো অনুপস্থিত না দেখানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। এছাড়া অবশিষ্ট বকেয়া মজুরি আগামী ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে পরিশোধ করা হবে। একইসাথে ২০২৫ সালের ৭ এপ্রিলের মধ্যে প্রভিডেন্ট ফান্ডের বকেয়া চাঁদা পরিশোধ করা হবে। এসব সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে শ্রমিকরা ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরি বলেন, ‘যৌথ বৈঠকে লিখিত সিদ্ধান্ত কার্যকর না হওয়ায় এনটিসি-এর চা শ্রমিকরা খুবই হতাশ হয়। এটি শ্রমিকদের সাথে একটি তামাশা। তিনি সরকারের শিরগিরই হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।’

ন্যাশনাল টি কোম্পানির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার শফিকুর রহমান মুন্না বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের অনাপত্তিপত্র না পাওয়ায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যায়নি। ফলে শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি দেয়া সম্ভব হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, আগামী রোববার বা সোমবারের মধ্যে ব্যাংক ঋণ পাওয়া গেলে বকেয়া মজুরি দেয়া শুরু হবে এবং চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেবে।’