সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৫ সালে সর্বশেষ সিজারিয়ান অপারেশনের (সন্তান প্রসবে অস্ত্রোপচার) মাধ্যমে এক শিশুর জন্ম হয়েছিল। এরপর নানা প্রতিকূলতা ও লোকবল সংকটের কারণে প্রসূতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। ভয় আর আতঙ্কের কারণে প্রসূতি রোগীরাও আসতেন না এই হাসপাতালে।
অবশেষে দীর্ঘ ৯ বছর পর এই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক কন্যাশিশুর জন্ম হয়েছে। সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১০টা ২০মিনিটের দিকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে সফলভাবে এই অস্ত্রোপচারটি সম্পন্ন হয়েছে। নবজাতক কন্যাশিশুর বাবা সেলিম আহমেদ উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের বারগাতী গ্রামের বাসিন্দা।
সফলভাবে সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন করতে পেরে বেশ উৎফুল্ল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে করে এই উপজেলা হাসপাতালের প্রতি ফের মানুষের আস্থা ফিরবে বলে মনে করছেন তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৫ সালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে একটি শিশুর জন্ম হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ নয় বছর সিজারের মাধ্যমে কোনো শিশুর জন্ম হয়নি এই হাসপাতালে। নানান প্রতিকূলতা ও লোকবল সংকটের কারণে প্রসূতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।
২০২৪ সালের প্রথম দিকে ডা. সাইফুল ইসলাম স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রাথমিক পর্যায়ে প্রসূতি মায়েদের সিজারিয়ান অপারেশনের সার্বিক ব্যবস্থা ও প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সফলভাবে সিজারিয়ান অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিলাদুর রহমান বলেন, গতকাল প্রসূতী মাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে এলে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখা যায় শিশুটি মাতৃগর্ভে উল্টো অবস্থায় রয়েছে। পরে এ নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে প্রসূতি মায়ের সিজারিয়ান অপারেশন করতে হবে এবং সেটি এই হাসপাতালেই করতে হবে। দীর্ঘদিন পর সিজার করার কারণে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে রোববার রাতে বসে অপারেশনের সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। পরে সোমবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটের সফল অপারেশনের মাধ্যমে একটি কন্যা শিশুর জন্ম হয়।
জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা নিঃসন্দেহে জৈন্তাপুরবাসীর জন্য একটি সুখবর। কয়েকমাস পূর্বে প্রসূতি মায়েদের যাদের অবস্থা জটিল থাকতো তাদের হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই অস্ত্রোপচার করাতে রাজি হতো না। আজকে সফলভাবে সিজার হয়েছে। এতে করে উপজেলাবাসী ফের সেই আস্থা ফিরে পাবেন বলে মনে করেন তিনি।
ডা. সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, মা ও নবজাতক দুজনেই সুস্থ আছেন। পাশাপাশি হাসপাতাল থেকে প্রসূতি মায়ের জন্য সরকারি ঔষধ সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রসূতি মায়েদের জটিল সমস্যায় সিজারিয়ান অপারেশন প্রয়োজন হলে এখন থেকে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসতে পারবেন। এখানে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে।