‘সিসা দূষণ বন্ধ হলে, বাড়বে শিশু বুদ্ধি-বলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ‘আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ (২০-২৬ অক্টোবর)’ উপলক্ষে ইউনিসেফ-এর সহায়তায় এবং ইয়ুথনেট গ্লোবাল এবং পিওর আর্থ বাংলাদেশ যৌথভাবে সিলেট জেলায় জনসচেতনতামূলক র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। কর্মসূচিটি শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়।
র্যালিতে ইয়ুথনেট গ্লোবালের স্বেচ্ছাসেবীরা, পিওর আর্থ বাংলাদেশ ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিবৃন্দ, সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন যুব সংগঠন, সুশীল সমাজ সংগঠন ও স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধি, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারণী মহল, পরিবেশ অধিকারকর্মী, সমাজকর্মী, গণমাধ্যমকর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
র্যালিটি বিকাল ৩.৩০টায় শহীদ মিনার থেকে শুরু করে চৌহাট্টা প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে মানববন্ধন তৈরির মাধ্যমে দুপুর ৪:৩০ টায় শেষ হয়। এ সময় সবার হাতে ছিল সিসা দূষণ প্রতিরোধমূলক ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড এবং মুখরিত ছিল “সিসা দূষণ প্রতিরোধে, আমরা আছি একসাথে”- সহ বিভিন্ন স্লোগানে।
সিসার বিষক্রিয়া প্রতিরোধ করতে সর্বস্তরে সচেতনতা বাড়ানো এবং সরকার ও নীতিনির্ধারণী মহলকে এবিষয়ে আইন ও নীতিমালার যথাযথ প্রয়োগ করে কঠোর ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে জোর দেওয়া ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য। এসময় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সিসা দূষণ বিষয়ক লিফলেট ও স্টিকার বিতরণ করা হয়।
সিসা দূষণ প্রতিরোধের জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে, প্রতি বছর অক্টোবর মাসে “আন্তর্জাতিক সিসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ ২০২৪” সারাবিশ্বে পালিত হয়। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আহ্বানে এবছর ২০শে অক্টোবর থেকে ২৬শে অক্টোবর পর্যন্ত সপ্তাহটি পালন করা হবে। এবারের দিবসের মূল লক্ষ্য হলো সাধারণ মানুষ, সরকার, সুশীল সমাজ, স্বাস্থ্যকর্মী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্যদের মাঝে সিসা দূষণের ক্ষতিকর দিকগুলো তুলে ধরা এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকরী উদ্যোগ নেয়ার উপর জোর দেয়া।
র্যালি, মানববন্ধন ও আলোচনা শেষে অংশগ্রহণকারীরা সরকার ও নীতিনির্ধারকদের প্রতি পাঁচ দফা দাবী জানায়: ভোগ্যপণ্য ও নিত্য ব্যবহার্য পণ্য যেমন অ্যালুমিনিয়ামের রান্নার বাসনপত্র, দেয়াল রং, শিশুদের খেলনা ইত্যাদিতে ক্ষতিকারক ভারী ধাতু সিসা মেশানো বন্ধ করতে বিভিন্ন জিনিসের নিরাপদ মানদণ্ড ও কঠোর মনিটরিং নিশ্চিত করা, দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা অনিরাপদ সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি কারখানাগুলো বন্ধ করে বা রূপান্তরিত করে নিরাপদ ও পরিকল্পিত রিসাইক্লিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, অবৈধ সিসা ব্যাটারি কারখানার কারণে দূষিত এলাকাগুলো চিহ্নিত করে মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং সিসা দূষিত অঞ্চলগুলো পরিষ্কার করা, সিসা দূষণ প্রতিরোধে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালাগুলো পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ন করা এবং আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করা, এবং সকল অংশীদ্বারদের সাথে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সিসা দূষণের উৎস ও ভয়াবতা সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টি করে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষা করা।