বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ ও চাকরি নিয়মিতকরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছে সিলেটের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএফএমএমইউ) বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (৭ অক্টবোর) দুপুরে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে অবস্থান নেন আন্দোলনকারিরা। এসময় নগরীর চৌহাট্টা ও আশেপাশের সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষুব্ধরা।
জানা যায়, বিগত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে গা ঢাকা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. এনায়েত হোসেন। বিনা ছুটিতে প্রায় দুই মাস ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত উপাচার্য। তিনি অফিস করছেন না আবার পদত্যাগও করছেন না। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের দাবি তোলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে আন্দোলনের মুখে ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মোহাম্মদ ফজলুর রহমান।
একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন ভিসি, ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রার। তারা কেউই অফিসে আসছেন না। এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বন্ধ রয়েছে সকল কার্যক্রম।
বেতন বঞ্চিতরা জানান, প্রায় দুই বছর ধরে তারা বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে পারছেন না। বিষয়টি সুরাহার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে বারবার তারা গিয়েছেন। তিনি কেবল তাদের আশ্বস্ত করেছেন। তাঁর মেয়াদের দুই বছরেও তিনি বিষয়টি সমাধান করেন নি। এজন্য বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন বিক্ষোভকারীরা।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনুমোদনহীন পদ রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) পদে যোগদান করেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম মোহাম্মদ ফজলুর রহমান। অভিযোগ রয়েছে যোগ্যতার ঘাটতি থাকা সত্বেও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের আশীর্বাদে রেজিস্ট্রার পদ বাগিয়ে নেন সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতা। এরপর থেকেই নানা অনিয়ম শুরু করেন তিনি। তাঁর এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে স্থানীয় পত্রিকা ও বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তবুও ক্ষমতার দাপট ও ভিসির একচ্ছত্র মদদে তিনি স্বপদে বহাল ছিলেন। প্রফেসর ডা. এনায়েত হোসেনের মদদে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা আর্থিক অনিয়ম করেন তিনি। এছাড়াও আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। তাঁর ভয়ে তটস্থ ছিলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি তাঁর পছন্দের কয়েজন কর্মকর্তা ও আনুগত্য কর্মচারী দিয়ে আলাদা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন। এই সিন্ডিকেট দিয়েই নানা অপকর্ম করাতেন তিনি। তাঁকে মদদ দিতেন উপাচার্য প্রফেসর ডা. এনায়েত হোসেন।