শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আওয়ামী লীগের নেতারা। হামলা-মামলার ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাচ্ছেন তারা। বিশেষ করে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নেতারা গোপনে দেশ ত্যাগ করছেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের অন্তত ১০ প্রভাবশালী নেতা যুক্তরাজ্যে ফিরে গেছেন। যাদের অধিকাংশই যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য, সিটি করপোরেশনের মেয়র, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। পদ হারানোর কারণে দেশে ছেড়েছেন তারা। যুক্তরাজ্যে ফেরা এসব নেতাদের মধ্যে অনেকেই দেশ থেকে পালিয়ে ভারত যান। সেখান থেকে উড়াল দেন যুক্তরাজ্যে।
অর্ন্তবর্তীকালীর সরকারে প্রধান হিসেবে ড. মোহাম্মদ ইউনুস দায়িত্ব নেয়ার পর আওয়ামী লীগ আমলে নির্বাচিত দেশের সকল সিটি মেয়র, পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্ত হওয়াদের তালিকায় প্রায় এক ডজন নেতা রয়েছেন যুক্তরাজ্যের নাগরিক।
ইতোমধ্যেই দেশ ছেড়ে যুক্তরাজ্যে এসেছেন সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, সিলেট সিটি করপোরশেনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আমিনুল ইসলাম রাবেল, বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমান, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম কিরণ, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাদাত মান্নান অভি, দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেওয়ান তানভীর আশরাফি।
এর মধ্যে সর্বপ্রথম গত ১৭ আগস্ট লন্ডন পৌছান সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এর কয়েক দিন পর ফেসবুক লাইভে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনায় মুখর হন তিনি। তিনি তখন দাবি করেন, সিটি মেয়র, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানদের জোর করে এক কলমের খোঁচায় বাদ দেয়া হয়েছে।
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ছাড়া যুক্তরাজ্যে আসা নেতাদের মধ্যে কেউই এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেননি। তবে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন প্রতিদিনই।
যুক্তরাজ্যের সাসেক্স আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমানুজ্জামান মহী বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা ও নির্যাতন হচ্ছে। ঘরবাড়িতে থাকতে পারছেন না নেতাকর্মীরা। অনেকে হয়তো নিজের নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ জায়গায় যাচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারো নেতারা নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন।