হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে আমাদের সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। প্রচলিত রাজনীতিকে কবর দিয়ে সকল মানুষকে সম্মান করতে হবে। সকল মানুষকে তার নিজ ধর্ম পালনের স্বাধীনতা দিতে হবে…… ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে একইসঙ্গে কাজ করতে হবে। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় সুনামগঞ্জের শাল্লায় গণমিলনায়তনে সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী অ্যাড. শিশির মনির।
তিনি বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে কে হিন্দু,কে মুসলমান এটা বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হলো আমরা মানুষ। উদাহরণ স্বরুপ তিনি বলেন, যদি কোনো জায়গায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে হিন্দু-মুসলমান না খুঁজে আগে তাদেরকে উদ্ধার করতে হবে।
অ্যাড. শিশির মনির বলেন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, রাজনীতি ও সম্প্রীতি এগুলোতে কোন ধর্ম নেই। এগুলো সবার মধ্যেই ঘটে। কারো যদি স্বাস্থ্যের উন্নতি বা অবনতি হয় সেখানে হিন্দু-মুসলমান হিসেবে হয় না।
তিনি আরও বলেন, হিন্দু-মুসলমান ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। দেশ ও জাতি উন্নয়নে আমাদের সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। প্রচলিত রাজনীতির কবর দিতে হবে। অনেকেরই বাড়ি আছে,গাড়ি আছে,ছেলেমেয়ে আছে কিন্তু সুখশান্তি নেই। আবার অনেকেই রাস্তায় রিক্সা চালায় হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করে তাদের মধ্যে আবার অনেক সুখ রয়েছে। শুধু পয়সা হলেই সুখশান্তি লাভ করা যায় না। একজন হতদরিদ্র মানুষ ও একজন অট্টালিকায় বসবাস করা মানুষের সুখের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
এ সময় তিনি বলেন, মানুষের মধ্যে যদি এসব পার্থক্য না থাকতো তাহলে মানুষ ঈশ্বর ছিনতো না। আল্লাহকে ডাকতো না। সবাই ফেরাউনের মত হয়ে যেত। যার যার ধর্ম যার যারভাবে পালন করতে দিতে হবে। কারো ধর্ম পালনে পুলিশ পাহারা দিবে কেন? এই স্বাধীন দেশে ধর্ম পালনে পাহারা লাগবে কেন? রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হলো কল্যাণ। এই কল্যাণকর কাজ ছোট মনের মানুষ দিয়ে হয় না।
সমাবেশে উপজেলার বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গঙ্গেস চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মাওলানা সুহেল আহমেদ,সাগর আহমেদ ও জগৎজ্যোতি রায়ের যৌথ সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক আমির হোসাইন।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ৪নং শাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুস সাত্তার, ৩নং বাহাড়া ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু, ২নং হবিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুবল চন্দ্র দাস, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিপাল দাস মিল্টন,শ্যামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীহার চৌধুরী,জামায়াত ইসলামের শাল্লা শাখার সভাপতি হাফেজ নূরে আলম সিদ্দিকি,খালিয়াজুরি উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা রুহুল আমিন, গোবিন্দ চন্দ্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সজল চৌধুরী, পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিধান চন্দ্র চৌধুরী, থানা মসজিদের ইমাম মাওলানা আবুল কাশেম প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে উপজেলার ডুমরা আখড়ায় স্থানীয় হিন্দু নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় সভাও করেছেন অ্যাড. শিশির মনির। পরে বিকাল ৫টায় শাল্লা হাসিমিয়া দাখিল মাদ্রাসায় স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের নেতৃবৃন্দের সাথেও মতবিনিময় সভা করেন তিনি।