বিশ্ববিখ্যাত গণিতবিদ প্র. ড. আব্দুল কুদ্দুসের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী

বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ, ‘Pure mathmetics’ এ বাংলাদেশের প্রথম ডক্টরেট ডিগ্রীপ্রাপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কুদ্দুসের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের এই দিনে মারা যান তিনি। মো. আব্দুল কুদ্দুস ১৯৪৮ সালের ২৫ নভেম্বর তিনি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তাঁর পিতা মরহুম মো. পারু মিয়া ছিলেন গ্যানিংগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আজীবন সেক্রেটারি, এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, জনাব আলী সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও বানিয়াচং সরকারি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা। তার মা মরহুমা খায়রুন্নেসা খানম ছিলেন সাগরদিঘির পশ্চিম পারের ঐতিহ্যবাহী খান পরিবারের মেয়ে।

ড. মো. আব্দুল কুদ্দুসের শিক্ষাজীবন শুরু হয় চৌধুরী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানে দুই বছর পড়াশোনা করে ভর্তি হন বানিয়াচং এল আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে। স্কুলে বরাবরই প্রথম স্থান অধিকার করতেন তিনি। এই স্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। ১৯৬৬ সালে সিলেট এমসি কলেজে ভর্তি হন এবং প্রথম বিভাগে আইএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে অনার্সসহ প্রথম শ্রেণিতে এমএসসি পাস করেন।

সেই সময় চাকরিতে যোগদান না করে তিনি ১৯৭২ সালে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন এবং ১৯৮১ সনে প্রফেসর ড. মো. রমজান আলী সরদারের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার পিএইচডির বিষয় ছিল- ‘Theory of generalized function’ এটি বিশুদ্ধ গণিতের (Pure mathematics) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের ইতিহাসে বিশুদ্ধ গণিতে তিনিই প্রথম ডক্টরেটধারী ব্যক্তিত্ব, গণিত শাস্ত্রে তৃতীয় ডক্টরেট এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩৫তম ডক্টরেট।

অনার্স প্রথম বর্ষে থাকাকালীনই তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আয়ূব খানের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা, প্রথম মুসলমান নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো. আব্দুস সালামের সঙ্গে। সালাম সাহেব কিশোর আব্দুল কুদ্দুসের জ্ঞানের প্রখরতা দেখে যারপরনাই মুগ্ধ হন এবং বিশ বছরের জুনিয়রের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হন। ড. আব্দুস সালাম তার প্রতিষ্ঠিত ইতালির ট্রিয়েস্টিতে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল ফিজিক্স—এ উচ্চতর গবেষণার জন্য আব্দুল কুদ্দুসকে আহ্বান করেন।

ড. আব্দুল কুদ্দুসের প্রায় অর্ধশত প্রবন্ধ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং সেসব বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়ানো হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর পর তিনি ১৯৮৬ সালের ১৪ জানুয়ারি প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ১৯৮৮ সালের ১ অক্টোবর সহকারী অধ্যাপক, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই সহযোগী অধ্যাপক, ২০০১ সালের ২৭ মার্চ অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।