সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার দুর্নীতিবাজ, স্বৈরাচার ও অবৈধ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়ারিছ উদ্দীন আল-মামুন এর অপসারণের দাবিতে গত ৪ আগস্ট বুধবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপমা দাস এর কাছে আবেদন পত্র প্রদান করেছেন মাদরাসা শিক্ষার্থীবৃন্দ। আবেদন দাখিলের সময় শিক্ষার্থীরা কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আগেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়ারিছ উদ্দীন আল-মামুন এর পদত্যাগের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপমা দাসকে মৌখিক ভাবে অনুরোধ জানান।
আবেদন পত্রের সাথে শেখ ফজিলাতুন্নেছা ফাজিল মাদরাসার স্বৈরাচারী ও দূর্নীতিবাজ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়ারিছ উদ্দিন আল মামুন এর কিছু অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে বুরুঙ্গা ইউনিয়ন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এর উদ্যোগে ছাপানো লিফিলেট প্রদান করা হয়। লিফলেটে উল্লেখ করা হয়েছে- ওয়ারিছ উদ্দিন আল মামুন জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়েছেন। ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এক বছর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে পারবেন, অথচ প্রায় ছয় বছর যাবৎ এ দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারী ব্যাক্তি অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে বসে আছেন। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দিলেও এমনকি মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বিগত ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে অধ্যক্ষ হওয়া এবং অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে কেন নিয়োগ দিচ্ছেন না- এ মর্মে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করলেও এখনো পর্যন্ত তিনি বহাল তবিয়তে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে আছেন।
মহামান্য হাইকোর্ট ২২ জানুয়ারি ২০২০ ইংরেজি তারিখে ফাজিল মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি হতে হলে কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে বিএ বা সমমান যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হবে বলে রায় প্রদান করেন, কিন্তু তিনি অবৈধভাবে দখলকৃত চেয়ারকে দীর্ঘস্থায়ী করতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একজন স্ট্রোক ও প্যারালাইসেস রোগী টাইটেল পাশ ব্যক্তিকে সভাপতি মনোনীত করতে কাজ করেছেন।মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সহ-সভাপতি, যে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ৮ম শ্রেণীর পরীক্ষা দিয়ে একাধারে দুইবার ফেল করেছেন, সেই রাশেদুল হক চৌধুরী বজলু কর্তৃক বিগত ২৮/৮/২০২২ ইং তারিখে সহকারি জজ আদালত বালাগঞ্জে মিথ্যা ভিত্তিহীন ও হয়রানি মূলক একটি মামলা দায়ের করেন, সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা বারবার তাকে এ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিতে বললেও তিনি কার স্বার্থে চুপ রয়েছেন? তিনি অত্র এলাকার দরিদ্র ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ফরম ফিলাপ ফিস, আভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ফিস, মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি আদায় করে প্রায়ই মাদরাসার কাজে বিমানে ঢাকা যাতায়াত করেন। মাদ্রাসার নৈশ প্রহরী ইফতেখার আহমদ প্রায় এক বছর থেকে অনুপস্থিত থাকলেও তিনি অন্য লোক দিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করিয়ে তার বেতন ভাতা দীর্ঘদিন ধরে উত্তোলন করছেন।
মাওলানা আহমদ আলী হেলালী (জ্যেষ্ঠ সহকারী অধ্যাপক-আরবী) মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলেও বেতন বিলে তার স্বাক্ষর এর জায়গায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওয়ারিছ উদ্দীন আল মামুন নিজে স্বাক্ষর করে বর্তমান ও বকেয়া বেতন ভাতাদি উত্তোলন করছেন, কিন্তু কেন?চাকুরী বিধিমালা লংঘন করে তিনি বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে সিলেটে গিয়ে দিনরাত প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, এমনকি শিক্ষক কর্মচারীদের কে ও অংশ নিতে চাপ প্রয়োগ করেছেন, এটা কি তার অন্যায় নয়? তিনি শিক্ষক কর্মচারী ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ভাব দেখিয়ে আচরণ করেন, চাকুরী খেয়ে ফেলবেন, মামলায় ঢুকিয়ে দিবেন। এ প্রতিষ্ঠানে আমি সরকার, আমি যা বলব, তাই আইন, তা মানতে হবে, অন্যথায় চাকুরী ছেড়ে দেন।- ধরনের কথা প্রায়ই বলে থাকেন। তার আচরণে ক্ষুদ্ধ হয়ে বিগত ১৪ জানুয়ারি ২০২০ ইং তারিখে তার অব্যাহতির জন্য সকল শিক্ষক-কর্মচারী লিখিত আবেদন পেশ করেন, এরপরেও তিনি এখনো এই পদে বহাল আছেন কেন? কেন পদত্যাগ করছেন না ।
ব্যানবেইস এবং মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এর কোন নির্দেশনা ছাড়াই তিনি বিগত শুক্রবার (৩০/০৮/২০১৪ তারিখে) দিবাগত রাতে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী সবার অজান্তে রাতের আধারে মাদরাসার নাম পরিবর্তন করেছেন। বুরুঙ্গা এলাকার ভেতরে নিজেকে তিনি আওয়ামী লীগ এবং এর বাহিরে গেলে হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত মজলিশ ইত্যাদির পরিচয় দেন। যা তার চাকুরী বিধিমালার সাথে কোনভাবেই যায় না। দ্বিমুখী স্বভাবের দ্বারা তিনি কখনো একে, কখনো ওকে খুশি করতেই এসব করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। তাই ফিতনাবাজ, দূর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারী ওয়ারিছ উদ্দিন আল মামুন এর পদত্যাগ দাবী করেছেন মাদরাসার শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বুরুঙ্গা ইউনিয়ন শাখার নেতৃবৃন্দ।
বিজ্ঞপ্তি-