ওসমানীনগরে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

সিলেটের ওসমানীনগরে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অর্ধ শতাধিক লোক আহত হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (৩০ আগস্ট) জু’মার নামাজের পর তাজপুর ইউনিয়নের মঙ্গলচন্ডী বাজারে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক।

জানা যায়, শুক্রবার সকালে মঙ্গলচন্ডী কালিবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মাটিহানী ও সোনারপাড়া গ্রামের কিশোরদের মধ্যে ফুটবল খেলা হয়। খেলা চলাকালে মোকামপাড়া মাটিহানী গ্রামের ছুরুক মিয়ার ছেলে ফারহানের (১৬) সাথে সোনারপাড়া গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে সুলেমানের বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি হয়। এর জেরে জু’মার নামাজের পর দুই গ্রামের লোকজন লাঠিসুটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে মাটিহানী গ্রামের আনহার মিয়া, রাজু মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, কাদির মিয়া, নেপুর মিয়া, সোহেল মিয়া, আল আমিন, কাদির মিয়া, বেলাল, সুয়েব, আবুল শাহ, কালাম আহমদ, রিয়াজ, শুকুর আলী, ফারহান এবং সোনারপাড়া গ্রামের দুলন মিয়া, সিরাজ মিয়া, সুলতান মিয়া, জামিল আহমদ, মামুন আহমদ, মোশাহিদ আলী, ফজর আলী, জমশর আলী, মাফিজ উল্যা, জাকারিয়া আহমদ, মোজাহিদ আলী, আমির আলী, রাবেল আহমদ, আল আমিন, শাহেদ আহমদ, শামীম আহমদসহ ইটপাটকেলের আঘাতে উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইটপাটকেলের আঘাত পেয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি ফেইজের লাইভে জানিয়েছেন এএসআই সুমন। তবে পুলিশ সদস্যরা আঘাত পাওয়ার বিয়ষটি অস্বীকার করেছেন ওসমানীনগর থানার ওসি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

মোকামপাড়া মাটিহানী গ্রামের ফারহানের চাচা রলেক মিয়া বলেন, ফুটবল খেলায় আমার ভাতিজাকে মারপিট করে সোনারপাড়ার সুলেমান। আপোষ মিমাংশায় বিষয়টি নিস্পত্তির প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় জু’মার নামাজের পর সোনারপাড়া গ্রামের লোকজন লাটিসুটা নিয়ে আসে। এরপর দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে আমাদের অনেক লোক আহত হয়।

সোনারপাড়া গ্রামের ফজল মিয়া বলেন, জুমার নামাজের পর আমাদের মসজিদের উন্নয়ন কাজ নিয়ে আলোচনায় ছিলাম। এসময় মাটিহানী গ্রামের রলেক আমার ভাই সুন্দর আলীকে ফোন করে ডাক দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে যুবকরা ছুটে যায়। এরপর দুই গ্রামের লোক সংঘর্ষে জড়ালে আমাদের ২০-২৫জন লোক আহত হয়। দুইজনকে গুরুতর অবস্থায় ওসমানীতে ভর্তি করা হয়েছে।

তাজপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কবির আহমদ বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ হলে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক বলেন, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। সংঘর্ষে দুই গ্রামের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। পুলিশের কেউ আঘাত পায়নি বলে জানান তিনি।