জগন্নাথপুরে বহিরাগতের হাতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকা লাঞ্ছিত

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় এক নারী শিক্ষক লাঞ্ছিত হবার অভিযোগ ওঠেছে। এ নিয়ে নিন্দার ঝড় বইছে। হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের দাবি জোরালো হচ্ছে। যদিও এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকালে উপজেলার আটঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভাষা রায় বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম শ্রেণির কক্ষে পাঠদান করছিলেন। এসময় বিদ্যালয়ের অন্য শিশুদের সঙ্গে আসা ভর্তি বিহীন এক শিশু কে দেখে তিনি দপ্তরির মাধ্যমে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিছু সময় পর বিদ্যালয়ে ঢুকে আটঘর গ্রামের লায়েক খান শ্রেণি কক্ষে ঢুকে তার ছেলেকে বের করে দেওয়ার কারণ জানতে চেয়ে শিক্ষিকার ওপর চড়াও হন।এক পর্যায়ে শিক্ষিকাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তাঁর চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা ছুটে এসে তাকে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রাপ্রুু চাই মারমা সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে একটি বৈঠক করেন। পরে ওই বৈঠকে উপস্থিত হয়ে লায়েক খান ক্ষমা চান।

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ভাষা রায় বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, এখন কথা বলতে পারছি না। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুনিল দেবনাথ বিদ্যালয়ের একজন অভিভাবকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকের অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। পরে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন।

সভায় উপস্থিত শিক্ষক নেতা শাহাজাহান সিরাজী জানান, ‘নারী শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা মর্মাহত। শিক্ষিকার ওপর হামলা করে ক্ষমা চেয়ে শেষ এটা মানতে পারছেন না শিক্ষক সমাজ। এ বিষয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ।’

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা। অবিলম্বে এ বিষয়ে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি পালনের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। তাঁর তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে জগনাথপুর সরকারি শিক্ষা অফিসার জানান, ‘ঘটনা দুঃখজনক। এভাবে একজন অভিভাবক চুল ধরে তাকে মারধর করতে পারেন না। এই বাচ্চা ভর্তি নেই।।’

ভিকটিম আটঘর সহকারী শিক্ষিকা ভাষা রায় জানান, ‘আমার উপর অন্যভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। যে বাচ্চা নিয়ে ঘটনা হয়েছে সে বাচ্চা আমার স্কুলে ভর্তি নয়। আমি বিচার চাই।’