ছাতকে প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতিসহ ৬ দফা অভিযোগে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ছৈলা আফজলাবান ইউনিয়নের লাকেশ্বর পলিরগাঁও (এল.পি) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমানের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এলাকাবাসী।

রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি গ্রহণ করেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।

স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত লাকেশ্বর পলিরগাঁও (এল.পি) উচ্চ বিদ্যালয়কে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস.এম আশিকুর রহমান। বিগত কয়েকদিনন তাঁর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় তিনি স্কুল থেকে পলাতক রয়েছেন।

গুরুতর অভিযোগ এনে স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০২০ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক, লাইব্রেরিয়ান, নৈশ্য প্রহরী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আয়াসহ মোট ৫টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ রেখে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নিয়োগ কার্যক্রম করেন তিনি। এমনকি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরাও ওই নিয়োগের ব্যাপারে কিছু জানতেন না। এছাড়া প্রতি মাসে ৮-১০ দিন বিদ্যালয়ে আসেন আশিকুর রহমান।

এসময় গত ১৬ বছরে স্কুল ফান্ডের প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা আত্মসাতসহ, অতিরিক্ত সেশন ফি ও মাসিক বেতন আদায়, পরীক্ষার ফি এবং এস.এস.সি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। শর্তস্বাপেক্ষে ফেরতযোগ্য হলেও আজ পর্যন্ত এ টাকা কেউ ফেরত পায়নি বলেও ৬ দফায় উল্লেখ করেন তারা।

স্বজনপ্রীতির অভিযোগ এনে স্মারকলিপিতে বলা হয়, প্রধান শিক্ষক আশিকুর রহমান রাতের আঁধারে কমিটি গঠন করার পাশাপাশি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলে স্বজনপ্রীতসহ ঘুষ নিয়ে ফলাফল পরিবর্তন করেন তিনি।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও স্থানীয় মানুষের স্বাক্ষরিত দুটি স্মারকলিপি ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে এগুলোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাতক উপজেলার শিক্ষার্থী নেছার আহমেদ বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে পুরো এলাকাবাসীসহ আমরা অতিষ্ঠ। অনেক সময় আমরা প্রতিকার চেয়েও তার কোনো সুরাহা পাইনি। কারণ, তার দলীয় বাহিনী দিয়ে তিনি আমাদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি-ধামকি দিতেন। তাই জেলা প্রশাসক কাছে সাধারন শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্মরকলিপি প্রদান করা হয়েছে।’