সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ নিয়ে গড়িমসি এবং শিক্ষার্থীদের ৪ দফা দাবি না মানায় ফের আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। এসময় রাজনীতি নিষিদ্ধসহ আগামীকালের মধ্যে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার আল্টিমেটাম দেয় তারা।
রবিবার (১৮ আগস্ট) শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি না মানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়কে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবিগুলো হলো – বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকল সদস্যদের দলীয় ও লেজুড়বৃত্তিক সকল ধরণের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে; আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ও আবাসিক হলে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় উপাচার্যসহ প্রক্টরিয়াল বডি ও সকল হলের হল প্রভোস্টদের পদত্যাগ করতে এবং অনতিবিলম্বে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; এ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপরে সংগঠিত হওয়া বিভিন্ন অপরাধের (হুমকি, রাজনৈতিকভাবে চাপ সৃষ্টি, মারধর) তদন্ত সাপেক্ষে সকলকে বিচারের আওতায় আনা এবং যারা অছাত্র তাদেরকে অনতিবিলম্বে হল থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
এসময় শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা চারদফা দাবিতে এর আগেও ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। পরে আবারো ২৪ ঘন্টা সময় বেঁধে দিলেও কর্তৃপক্ষ এগুলো মেনে নেয়ার প্রয়োজনই মনে করেনি। যার কারণে দাবি আদায়ে আবারো মাঠে বিক্ষোভ মিছিলে নেমেছি আমরা। তাই ১৯ আগস্ট থেকে যেকোনোভাবে শিক্ষার্থীর ক্লাস-পরীক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদ তালা দিয়ে দাবি আদায়ে মাঠে থাকব।’
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, ‘গত রাতে বহিরাগত প্রায় ৫০টি মোটরসাইকেল আবাসিক হলের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি ছাত্রদের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে আমরা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’
এছাড়া তারা ক্যাম্পাসে সমন্বয়কদের প্রত্যাখান করে বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় ক্যাম্পাসে কোন কোটা বিরোধী আন্দোলন গড়ে ওঠে নাই। যারা এই মুহূর্তে নিজেদের সমন্বয়ক দাবি করছেন, আমরা তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করি।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ও ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ ফাঁকা থাকায় ক্লাস পরীক্ষা শুরু করার মতো আপাতত পরিবেশ নেই। তবে আমি সকল ডিনদের সঙ্গে নিয়ে তোমাদের দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করব। তাদের মতের ভিত্তিতে যদি সম্ভব হয় তাহলে অনতিবিলম্বে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু করার চেষ্টা করব।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সমালোচিত নোটিশ এর ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে অবগত নয় বলে এড়িয়ে যান।