শেখ হাসিনার পতনের খবর পেয়ে উচ্ছ্বাসিত জনতার আনন্দ মিছিলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা মিশে মানুষের বাসাবাড়ি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর করেছে বলে জানিয়েছে সিলেট বিএনপি। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সিলেট নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর সিলেটের পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল আমরা লক্ষ্য করলাম যে, মুক্তিকামী জনতার বিজয় উৎসবে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীরা অত্যন্ত সুকৌশলে প্রবেশ করে সিলেট শহরে বিচ্ছিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে। তাদের সাথে বিএনপি কিংবা ছাত্রজনতার কোন সম্পর্ক নেই। আমরা বিষয়টি উপলব্ধি করার পর পরই সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী ও ড. এনামুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে পুরো শহরজুড়ে মাইকিং করেছি। এবং কোথাও কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে তাদেরকে সাথে সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দিতে বলেছি। পাশাপাশি কোন তৃতীয় পক্ষ যাতে কোন বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় প্রতিরোধ কমিটি গঠন করার জন্য আহবান জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের সাথে বিএনপির কোন সম্পর্ক নেই। যে বা যারা বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত থাকুক না কেন, আমরা তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
এসময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গ্রেফতারকৃত সকল শিক্ষার্থী ও নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি ও সকল মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।
কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপির ১৫ বছরের সংগ্রাম ও টানা ৩৬ দিন দেশের ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর আমরা দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা অর্জন হয়েছে।
এই আন্দোলনে আবু সায়িদ ও মুগ্ধসহ আমাদের যত সন্তানরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে শাহাদাত বরণ করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা যাদেরকে গুম করে রেখেছিলেন তাদেরকে ছেড়ে দেও্যা শুরু হয়েছে। সিলেটবাসীর নেতা বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এম. ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ, আনসার আলীসহ যেসকল নেতাকর্মীরা গুম হয়েছেন তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনিপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খুব শীঘ্রই দেশে ফিরবেন। ততোসময় পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। এই সময়ে তৃতীয় পক্ষের কেউ যেন পূণ্যভূমি সিলেটে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি রাখতে হবে।