ফের প্লাবিত সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল, পানিবন্দী প্রায় ২ লাখ মানুষ

উজান থেকে নেমে আসা ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।  ইতোমধ্যে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলার গ্রামীণ সড়ক,  ঘরবাড়ি ও ফসিল জমি। সেই সাথে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন দুই উপজেলার দুই লক্ষাধিক মানুষ।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকালে ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে পৌর শহরের কাজীর পয়েন্ট, উত্তর আরপিননগর,  নতুন পাড়া, হাসননগরসহ বেশ কিছু নিচু এলাকা। তবে দুপুর থেকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ার ফলে পানি তেমন বৃদ্ধি পায়নি।

এদিকে, বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে তাহিরপুর উপজেলা। এছাড়াও দোয়ারাবাজার উপজেলার সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে সুরমা, লক্ষীপুর ও বাংলাবাজারসহ তিন ইউনিয়নের। ফলে এক মাসের ব্যবধানে দুইবার সুনামগঞ্জ বন্যা আক্রান্ত হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই অঞ্চলের মানুষরা।

ভোগান্তিতে পড়া সদর উপজেলার বাসিন্দা নূরুল আমিন বলেন, ‘কয়েকদিন আগে এক দফা বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখন আবারও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় আমাদের অবস্থা একদম নাজেহাল হয়ে গেছে।’

তাহিরপুর উপজেলার বাসিন্দা শওকত আহমদ বলেন, ‘বন্যার পানিতে আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ।  প্রতিনিয়ত পানি বাড়ছে।  ইতিমধ্যে সড়ক ডুবে গেছে।  ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি কম হলে নদীর পানি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘রাতভর আমি নিজে উপস্থিত থেকে পৌর শহরের যে এলাকায় পানি উঠে সেখানের ড্রেনেজ ব্যবস্থা পরিস্কার করেছি। যাতে পানি দ্রুত নিষ্কাশন হতে পারে। শহরের নিচু এলাকা গুলো রাতেই পরিদর্শন করেছি। অনেক জায়গায় সড়কে পানি ওঠলেও ঘরে পানি ওঠে নি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার পৌর এলাকার সম্মানিত নাগরিকদের পরামর্শ দিয়েছি যদি ঘরে পানি চলে আসে জিনিস পত্র উপরে তুলে রেখে আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার জন্য।  আমরা সেখানে খাবার পৌঁছে দিব।’

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘বন্যা মোকাবেলায় আমাদের সকল প্রস্তুতি নেওয়া আছে। আশ্রয়কেন্দ্র গুলো প্রস্তুত রয়েছে।’