সিলেটে দুই দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষিখাতে। বন্যায় আউশ ধান, বীজতলা, বোনা আমন ও গ্রীষ্মকালীন সবজির ২২ হাজার ৫৪৯ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৪১৮ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আরো দেড় লাখেরও বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ খায়ের উদ্দিন মোল্লা সিলেট ভয়েসকে কৃষিখাতের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এ বছর ২ হাজার ২৮৬ হেক্টর আউশের বীজতলা, ১৫ হাজার ৩৪৬ হেক্টর আউশ ধান, ৯ হাজার ৯৮৫ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি ও ১৬৭ হেক্টর বোনা আমনসহ ২৭ হাজার ৭৪৮ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছিল।
কিন্তু দুই দফা বন্যায় আবাদ করা জমির মধ্যে ২২ হাজার ৫৪৯ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে আউশের বীজতলা ১ হাজার ৯৮৫ হেক্টর, আউশ ধান ১১ হাজার ৮৭৫ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন সবজি ৮ হাজার ৫৪২ হেক্টর ও বোনা আমন ১৪৭ হেক্টর।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির ফলে দুই দফায় বন্যা আক্রান্ত হয় সিলেট। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রথম দফায় ২৭ মে থেকে ০৮ জুন ও দ্বিতীয় দফায় ১৪ জুন থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত ছিল সিলেট। তবে শনিবার (২৯ জুন) পর্যন্ত সিলেটের অসংখ্য গ্রাম পানিতে তলিয়ে থাকার খবর পাওয়া গেছে। বানের পানি যত কমছে ততই বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ভেসে উঠছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর ২ হাজার ২৮৬ হেক্টর আউশের বীজতলা আবাদ করা হয়েছিল। তার মধ্যে প্রথম দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮৯২ হেক্টর এবং দ্বিতীয় দফায় ১ হাজার ৯৩ হেক্টর। এতে ১ কোটি টাকারও বেশি। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে
এ বছর ১৫ হাজার ৩৪৬ হেক্টর আউশ ধান আবাদ করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম দফায় ২ হাজার ৮১৮ হেক্টর ও দ্বিতীয় দফায় ৯ হাজার ৫৭ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আউশ ধানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ১৩৪ কোটি টাকা।
চলতি মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন সবজি আবাদ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৯৮৫ হেক্টর। এর মধ্যে প্রথম দফায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৩৩৩ হেক্টর ও দ্বিতীয় দফায় ৫ হাজার ২০৯ হেক্টর। এ খাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৭১ কোটি টাকা।
এছাড়াও আবাদ করা ১৬৭ হেক্টর বোনা আমনের মধ্যে পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪৭ হেক্টর। এতে ক্ষতি হয়েছে ৮৪ লক্ষ টাকা।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি সহায়তার আওতায় আনা হবে কিনা জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের উপপরিচালক মোহাম্মদ খায়ের উদ্দিন মোল্লা সিলেট ভয়েসকে বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ হাজার কৃষককে ইতোমধ্যে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য কৃষকদের নিয়ে অন্য একটি তালিকা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে’।