আমাদের দেশে খিচুড়ি খেতে পছন্দ করেন না, এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্তই কম। বৃষ্টির দিন হলে তো আর কথাই নেই। বাংলাদেশিদের বৃষ্টিবিলাসের অন্যতম উপাদান হল এক থালা গরম খিচুড়ি। কখনো কি ভেবে দেখেছেন- বৃষ্টির সঙ্গে খিচুড়ি খাওয়ার আগ্রহের সম্পর্কটা ঠিক কোন জায়গায়?
রন্ধন বিশারদদের মতে, খিচুড়ি মূলত বাউলদের পছন্দের খাবার। বাউলরা যখন গ্রামে, পাড়ায় পাড়ায় গান করতেন তখন দক্ষিণা হিসেবে পেতেন চাল-ডাল। সেগুলোই একসঙ্গে মিশিয়ে বাউলেরা রান্না করে খেতেন। কালক্রমে এই খাবারের নাম হয় খিচুড়ি। এরপর থেকে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয় খিচুড়ি। সময়ের ব্যবধানে কম ঝামেলায় স্বাদযুক্ত খাবার হওয়ায় গৃহিণীরা এই রান্না রপ্ত করতে থাকেন।
আমাদের দেশে গ্রামাঞ্চলে বর্ষার সময় চারপাশ অথৈ পানিতে কানায় কানায় ভরে যায়। ঘর থেকে বের হয়ে বাজারে যাওয়া তখন কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই ঘরে থাকা চাল আর ডাল দিয়ে গৃহিণীরা খিচুড়ি রান্না করেন। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বৃষ্টিতে কাঠ ভিজে গেলে রান্না করতে সময় লাগে। তাই চাল-ডাল দিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় খিচুড়ি।
গৃহিণীদের ভাষ্য, বৃষ্টির দিনে রান্নাঘরে বেশি সময় কাটাতে ভাল লাগে না। এমন আড়মোড়া ভাঙা দিনে ঝটপট খিচুড়ি পাঁকানো যায়। আর তাছাড়া খিচুড়ির জন্য বাড়তি খরচের দরকার পড়ে না। আর গোপন ব্যাপারটা হচ্ছে, ঘরের বরের প্রশংসা কুড়ানো যায়।
বৃষ্টির দিনে গরম গরম খিচুড়ি ছেলে-বুড়ো সবার প্রিয়। বাসা-বাড়িতে তৈরির পাশাপাশি রাস্তার ধারে বিভিন্ন দোকানেও বৃষ্টির দিনে খিচুড়ির পসরা নিয়ে বসেন দোকানিরা। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে, আর গরমাগরম খিচুড়ির সাথে পেঁয়াজু, ছোলা- কী অপূর্ব স্বাদ!