বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি, সুরমার পানি এক পয়েন্টে নামলো বিপৎসীমার নিচে

বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢল কমা অব্যাহত থাকায় বন্যা সিলেটে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে নদ-নদীর পানিও আরও কমেছে। শনিবার (২২ জুন) সকালে সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে কমে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। তবে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি অন্যান্য পয়েন্টে বিপৎসীমার উপরে রয়েছে।

এদিকে, নদ-নদীর পানির সঙ্গে বৃষ্টিপাতও কমেছে সিলেটে। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬টা তেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় মাত্র ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিলেটে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন জানান, সিলেটে ২৪ ঘন্টায় ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও দুয়েকদিন বৃষ্টিপাত হতে পারে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে শনিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে শনিবার সকালে বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে। সকাল ৯টায় ১০ দশমিক ৭৪ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এই পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ০৯ সেন্টিমিটার উপরে ছিল।

শনিবার সকাল নয়টায় কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশীদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল এই পয়েন্টে পানি ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

তবে কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এই পয়েন্টে পানি ১০ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকাল ৯টায়ও একই মাত্রায় প্রবাহিত হচ্ছিল।

তবে কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে গতকালের তুলনায় আরও কমেছে। আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে গতকাল এই পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

এছাড়া আজ শনিবার লোভা, সারি, ডাউকি, সারিগোয়াইন ও ধলাই নদীর পানি আরও কমেছে।

শুক্রবার রাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সিলেট জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৩ টি ও জেলার ৪টি পৌরসভাসহ ১২০টি ইউনিয়ন প্লাবিত রয়েছে। এতে জেলার ১ হাজার ৪৯৮ টি গ্রাম প্লাবিত রয়েছে। এই পরিস্থিতে জেলার ৩৬৬ আশ্রয়কেন্দ্রে ২৫ হাজার ২৭৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা দূর্গত এলাকায় ৯ লাখ ৭৮ হাজার ২২৩ জন মানুষ পানিবন্দী রয়েছেন।

জেলা প্রশাসন আরও জানায়, বৃষ্টিপাত কমতে শুরু হওয়ায় গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে সূর্য ওঠায় বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। সরকারি বেসরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট সিটি করপোরেশনসহ জেলা ১৩টি উপজেলায় ১ হাজার ১৭৫ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও নগদ ৫৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, ১৯ লাখ টাকার শিশু খাদ্য, ১৯ লাখ টাকার গো খাদ্য ও ৪ হাজার ৭৯৫ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।