দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান উৎসব ঈদুল আজহা। এই ঈদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে পশু কোরবানি। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা তাই সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য লাভের আশায় পছন্দের পশু কিনে কোরবানি দিয়ে থাকেন।
চারদিন বাকি থাকতে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে পশু বেঁচা-কেনা। সিলেটের অন্যতম প্রাচীন পশু বিক্রির হাট কাজিরবাজার ঘুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, গরুর সংখ্যা তুলনামূলক কম। আজ বাজার বার না হওয়ায় গরুর সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
ক্রেতাদের দাবি, এবার গরুর দাম আকাশচুম্বী। এমন দামে গরু কেনা অনেক কষ্টসাধ্য হবে শেষ পর্যন্ত। এদিকে বিক্রেতারা বলছেন, পশুর খাদ্যের দাম বেশী হওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেক বেশি৷ তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
কানাইঘাটের বাসিন্দা ইসরাক আলী থাকেন মেজরটিলায়। প্রতিবছরের মত এবারও এসেছেন কাজীরবাজারে, উদ্দেশ্য- কোরবানীর জন্য পছন্দের গরু কেনা। তিনি বলেন, ‘বাজারে তেমন একটা গরু নেই, বাজার বার হলে গরু বেশি থাকতো। আসছি গরু কিনতে, দেখতে তো আসেনি। দেখি পছন্দের গরু পাই কী না।’
জিন্দাবাজারের স্থায়ী বাসিন্দা আয়ান রাজা চৌধুরীর বাবা প্রতিবছর এসে গরু কিনতেন। এ বছর নিজে দায়িত্ব নিয়ে বাজারে এসে ঘাম ঝরিয়ে ফেলেছেন রীতিমত। পছন্দসই গরুর দাম দেখে বেগ পেতে হচ্ছে তাকে। গরুর অতিরিক্ত দাম দেখে তিনি পছন্দের গরু কিনতে পারছেন না। তবে আশা করছেন, একটু কষ্ট করে বাজার ঘুরলে হয়তো কাঙ্খিত গরু পেতেও পারেন।
শেখ আনিসুর রহমান জয় বেশ কয়েকদিন যাবত ঘুরছেন বাজারে। কিন্তু দরদামে না হওয়ায় এখনো কাঙ্খিত গরু কিনতে পারেননি। তার দাবি, ‘গরুর দাম একটু কম হলে পছন্দসই গরু কিনতে পারব।’
এদিকে মৌলভীবাজারে কামালপুরের এক খামারি নেফুর মিয়া ৩০টি শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের গরু নিয়ে বাজারে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘উন্নত জাতের গরু প্রতিপালন অনেক ব্যয়সাধ্য। আপাতদৃষ্টিতে দাম বেশি মনে হলেও আমরা যারা গরু পালন করি, তারা জানি- কতটা মেহনত করতে হয় আমাদের। আমি আশাবাদি, আমার সবকয়টি গরুই এই বাজারে বিক্রি করতে পারব।’
এবার কাজিরবাজারে আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্বে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়া সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের ১৪টি মোবাইল টিম রয়েছে পুরো বাজারজুড়ে।
কাজিরবাজারের ম্যানেজার শাহাদাত হোসেন লোলন সিলেট ভয়েসকে জানান, ‘বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার্থে বেচা-কেনার জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। যদি রাস্তাঘাটে গরু আসতে কোন বাঁধা না হয় তাহলে বেচাকেনা ভালই হবে এবার। সে ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারি প্রত্যাশা করি।’