সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর বাজার সহ বিভিন্ন হাট-বাজারে মৎস্য অফিসের অভিযানে ৪ টি পিরানহা মাছ আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুন) বিকাল ৪ টায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান টের পেয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছ রেখে পালিয়ে যান। পরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মাছগুলোকে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
এসব হাট-বাজারে রূপচাঁদা মাছ হিসেবেই প্রতিদিন ক্রয়-বিক্রয় হয় নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত পিরানহা মাছ। প্রতি কেজির মূল্য অনেক কম হওয়ায় এবং স্বাদ একটু বেশি থাকার কারণে এ মাছ সাধারণ মানুষের কাছে অনেকটা গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। অনেকের পছন্দের তালিকায় আছে এ মাছ। স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা পিরানহা মাছকে সামুদ্রিক রূপচাঁদা মাছ হিসেবেই বিক্রয় করে থাকেন হাটে-বাজারে।
এ মাছ একটি হিংস্র এবং রাক্ষুসে মাছ। সারা বিশ্বে মানুষখেকো মাছ হিসেবে পরিচিত পিরানহা মাছের মানুষের প্রথম আঘাতের স্থান পায়ের আঙ্গুল। তিন ধরণের শব্দ উৎপন্ন করার মাধ্যমে এদের নিজস্ব একটা ভাষা আছে। জলাশয় বা নদীর অন্যান্য মাছ সমূলে ধ্বংস করে। ক্ষুধার্ত থাকার সময় এক পিরানহা আরেক পিরানহা মাছকেও খেয়ে থাকে। ধারালো দাঁত আর প্রায় মানুষের মতো জিহ্বা থাকার কারণে সে তার লক্ষ্যবস্তুতে শরীরের ১০ গুণ বেশি শক্তিতে কামড় দিতে সক্ষম।
মৎস্য ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, ‘এ মাছের চাহিদার ফলে আমরা মাছ বিক্রি করছি। নিষিদ্ধ ও বিষাক্ত কিনা জানি না।’
জগন্নাথপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার আল আমিন বলেন, ‘পিরানহা মাছের চর্বি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করে। এ মাছে থাকা ফসফেট আমাদের মূত্র প্রদাহ সৃষ্টি করে, নববিবাহিত নারীর বন্ধ্যত্ব সৃষ্টির অন্যতম কারণ। প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর থেকে অতিরিক্ত মাত্রায় ক্যালসিয়াম ও রক্ত বের করে দেয়। পিরানহা মাছ খেলে মানসিক সমস্যাসহ মানুষের দেহে নানান রোগের সৃষ্টি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি অসাধু চক্র এই মাছ আমাদের এলাকায় আনার পেছনে দায়ী। বাংলাদেশ সরকার এ মাছকে ২০০৮ সালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমরা শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করব।’