বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় সিলেট নগরীর ২৮টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। এতে নগরীর ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর পানিবন্দি রয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। সোমবার (৩ জুন) রাতে সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বন্যা দূর্গতদের মাঝে স্থানীয় কাউন্সিলর মাধ্যমে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে সিসিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতি ও আশ্রয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. মখলিছুর রহমান কামরান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমদ চৌধুরীসহ কাউন্সিলররা। সোমবার দুপুর ২টায় নগরীর মিরাবাজার, তেররতন, উপশহর ও ১০ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। এসময় তারা আশ্রয় কেন্দ্রসহ পানিবন্দিদের খোঁজ খবর নেন।
সিসিক জানায়, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রোষ্টার ডিউটি পালন করবেন সিসিকের কর্মকর্তাগণ। জরুরি সেবায় কন্ট্রোলরুম যোগাযোগের ফোন নম্বর (০১৯৫৮-২৮৪৮০০) ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, সোমবার মধ্যরাত থেকে টানা বর্ষণ হচ্ছে। সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নতুন করে আরও কয়েকটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়েছে। নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডে আরও ১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সকাল থেকে নগরীর প্লাবিত এলাকাগুলোতে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার রাতে এসব এলাকায় রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। নগরীর সকল ওয়ার্ডের স্থানীয় কাউন্সিলরদের সাথে বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছে নগর ভবন।
তিনি আরও জানান, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে নগরীর ছড়া-খাল পানি ভরে যাওয়ায় নিম্নাঞ্চল ওয়ার্ড সমূহে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নির্দেশে সব ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিসিক। আশ্রয়কেন্দ্রসহ ত্রাণ সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে সিসিক কতৃর্পক্ষ। ইতোমধ্যে ৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে খুলে দেওয়া হয়েছে।
১৫ নং ওয়ার্ডে কিশোরী মোহন বালক উচ্চ বিদ্যালয়, রামকৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়, বসন্ত মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, মওদুদ আহমের বাসায় আশ্রয় কেন্দ্র করা হয়েছে। ১৩ নং ওয়ার্ড মির্জা জাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ২৪ নং ওয়ার্ড তেররতন স্কুল, ওমর শাহ স্কুল ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘাসিটুলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ ঘাসিটুলা স্কুল, জালালাবাদ মডেল স্কুল, মঈনুদ্দিন মহিলা কলেজ, কানিশাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন কাউন্সিলর তাদের নিজ বাস ভবনে পানিবন্দী মানুষকে আশ্রয় প্রদান করছেন। ইতিমধ্যে মহানগরীতে লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দী আবস্থায় রয়েছেন।
