কোনো রকমের নোটিশ ছাড়াই বেলা ১২টা পর্যন্ত স্কুল তালাবদ্ধ দেখে স্কুলের বারান্দায় খেলায় মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ অপেক্ষা করে শিক্ষকদের কাউকে না পেয়ে একপর্যায়ে বাড়ি ফিরে যায় তারা। এমনটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়দল দক্ষিণ ইউনিয়নের হাঁপানিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, গত সাত-আট মাস ধরে এভাবেই চলছে বিদ্যালয়টির শ্রেণি কার্যক্রম। শিক্ষকরা আসেন ১১ টায় আর স্কুল ছুটি দিয়ে বেলা ২টায় চলে যান। শিক্ষকরা কখনই স্কুল শুরুর নির্ধারিত সময়ে আসেন না। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে কয়েকবার বলা হলেও সমস্যা সমাধানে তিনি কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেননি।
আজ সোমবার (২৭ মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত স্কুল তালাবদ্ধ দেখে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য বিষয়টি স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীকে জানান। পরে তিনি স্কুল তালাবদ্ধের বিষয়টি ফেসবুকে লাইভ করেন। লাইভে দেখা গেছে, শিক্ষকরা না আসায় তালাবদ্ধ রুমের সামনে শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হয় না তাদের। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলের বারান্দায় খেলায় মেতে উঠে। পরে ১২ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে শিক্ষকদের কাউকে না পেয়ে তারা বাড়ি ফিরে যায়।
অভিভাবক বাহার উদ্দিন বলেন, স্যার বলছিল আজ উপবৃত্তির জন্য নাম লেখানোর শেষ দিন। আমি কাগজপত্র নিয়ে সাড়ে ১১টায় স্কুলে এসে কোনো শিক্ষককে পেলাম না। স্কুলও দেখি তালাবদ্ধ।
দাতা সদস্য আহাদ মিয়া জানান, স্কুলটিতে দেড়শোর বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষার্থীরা সময়মতো বিদ্যালয়ে আসলেও শিক্ষকরা আসেন না। শিক্ষকরা সময়মতো যেন স্কুলে আসে এ নিয়ে গ্রামের মানুষ শিক্ষকদের সঙ্গে কয়েক দফায় আলোচনা করেন। কিন্তু শিক্ষকরা আমাদের কথার কোনো মূল্য দেয় না। যে যার মতো করে স্কুলে আসে আবার ইচ্ছে মতো স্কুল ছুটি দিয়ে চলে যায়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধব চন্দ্র সরকার বলেন, আমি প্রশিক্ষণে আছি। সহকারী শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে কেন যাননি তা বলতে পারছি না। বেলা ১২ টায় জানতে পেরেছি স্কুল তালাবদ্ধ, কোনো শিক্ষক যায়নি।
এ নিয়ে যোগাযোগ করলে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) হোসাইন মুহাম্মদ আল-মুজাহিদ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।