উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল, প্রভাব পড়েছে সিলেটে

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ বাংলাদেশের উপকূলে পৌঁছেছে। রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টার পর রিমালের অগ্রভাগের প্রভাব উপকূলে পড়তে শুরু করেছে। এটি আজ রাতেই মোংলার কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সাগর আইল্যান্ড হয়ে খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

এ সময় উপকূলীয় এলাকায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩৫ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে যেতে পারে। উপকূলীয় ১৫টি জেলায় ৮ থেকে সর্বোচ্চ ১২ ফুট পর্যন্ত উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। রোববার সন্ধ্যার পর থেকে সিলেট বিভাগজুড়ে ঝড়ো হাওয়া বইছে। একই সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিও পড়তে দেখা গেছে।

এর আগে রোববার দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়- প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে, দিনভর প্রচন্ড তাপপ্রবাহের পর ঝড়ো হওয়ার কারণে স্বস্তি ফিরেছে জনজীবনে। রোববার সিলেটের তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগেরদিন সকল রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রা ছাড়িয়েছিল ৩৮ এর উপরে।

গত কয়েকদিন ধরে তাপপ্রবাহের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করছে মানুষের মধ্যে। তীব্র গরমের কারণে প্রয়োজন ছাড়া বাসা-বাড়ি থেকে বের হননি মানুষজন। তবে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজনকে। প্রখর রোদের মধ্যে বাইরে ছিলেন খেটে খাওয়া মানুষজন।

এদিকে বঙ্গপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমাল রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যা ৬টার পর বাংলাদেশের উপকূলে পৌছেছে।

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের অগ্রভাগ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। মধ্য রাতে এর মূল অংশ অতিক্রম করতে পারে। মোংলাও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেত বহাল রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঘূর্ণিঝড় গতিবিধি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিকেলে এর গতিপথ ছিল ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার। অতিক্রম শুরুর পর এটির গতিপথ বেড়েছে। এখন গতি ঘণ্টায় প্রায় ১৭ কিলোমিটার। ঘূর্ণিঝড়ের পুরোটা অতিক্রম করবে মধ্য রাতের পর।

এদিকে রিমালে অতিক্রমের প্রভাবে বিকেল থেকে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে দমকা বাতাস বইছে, সঙ্গে আছে বৃষ্টি। বিভিন্ন জেলায় বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে অনেক গ্রাম। আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটছে হাজারো মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।

এছাড়াও উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।