এমপি আনোয়ারুল হত্যা: কেন মারলে, আদালতে ‘কসাই’ জিহাদকে প্রশ্ন

এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার জন্য ভারতের মুম্বাই থেকে ‘কসাই’ খ্যাত জিহাদ হাওলাদারকে কলকাতায় আনা হয়। কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর আনোয়ারুলকে হত্যার পর কীভাবে তাঁর মরদেহ টুকরা টুকরা করে ফেলে দেওয়া হয়, তার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বনগাঁ থেকে গ্রেপ্তারের পর জিহাদ হাওলাদারকে আজ শুক্রবার বারাসাতের আদালতে তোলে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করবেন গোয়েন্দারা।

বারাসত আদালতের প্রাঙ্গণে জিহাদকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকেরা। জিহাদের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। ‘কেন মারলে’সহ চারদিক থেকে নানা প্রশ্ন উড়ে এলে কোনো প্রশ্নেরই জবাব দেননি জিহাদ। পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে তিনি আদালতে ঢুকে যান।

সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, ২৪ বছর বয়সী জিহাদ হাওলাদার বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি অবৈধভাবে ভারতের মুম্বাইতে বাস করতেন। তাঁর বাড়ি খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে। তাঁর বাবার নাম জয়নাল হাওলাদার। এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আক্তারুজ্জামান শাহীন দুই মাস আগে জিহাদকে কলকাতায় নিয়ে এসেছিলেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার জিহাদকে গ্রেপ্তারের পর একটানা জেরা করেন সিআইডির কর্মকর্তারা। আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ কলকাতার কোন এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়েছে তা জানার চেষ্টা করা হয়। এমপির মরদেহের খোঁজে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতা পুলিশ এলাকার পোলেরহাট থানার কৃষ্ণবাটি সেতুর কাছে বাগজোলা খালে তল্লাশি চালায়। নিউ টাউন এলাকার যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুলকে খুন করা হয়, তার সামনে দিয়েই বয়ে গেছে এই খাল।

সিআইডি বলছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে জিহাদসহ চার বাংলাদেশি মিলে আনোয়ারুলকে ওই ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। তাঁর মরদেহ টুকরা টুকরা করে হলুদ ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাতে পথে কেউ ধরলে বলতে পারে, বাজার থেকে কেনা। উদ্দেশ্য ছিল, এভাবে গুম করা হবে, যাতে কেউ কোনো দিন তাঁর অস্তিত্ব না পায়।

১৩ মে আমানউল্লাহ, জিহাদ ও সিয়াম দুটি স্যুটকেসে এমপির দেহের টুকরাগুলো ভরে পাবলিক টয়লেটের সামনে দাঁড়ানো একটি গাড়িতে ওঠেন। সেই গাড়ির চালকও তেমন কিছু জানতেন না। পরে সিয়াম ও জিহাদকে স্যুটকেসসহ বিদায় করে আমানউল্লাহ আবার ওই ফ্ল্যাটে চলে যান। পরদিন ওই তিনজন বাকি টুকরাগুলো পলিথিনে পেঁচিয়ে ব্যাগে ভরে ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে যান।