সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানের সময় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামি মারা যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
নিহতের পরিবারের দাবি, পুলিশ আসামিকে ধরে মারধর করার একপর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। তবে পুলিশ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুলিশের দাবি, আসামি দৌড়ে পালিয়ে গেলে পুলিশ ওই আসামির পিছু নেয়, কিন্তু স্থানীয়দের বাঁধায় পুলিশ সদস্যরা ফিরে চলে আসে। আসামী পালাতে গিয়ে অসুস্থ্যতার কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।
মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের বুরুঙ্গাছড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি এই গ্রামের এরাব আলীর ছেলে রমিজ মিয়া (৫৩)।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ঘটনার দিন রমিজ তার বসতবাড়ি লাগোয়া নিজ টং দোকানে বসা ছিল। এদিন তাকে গ্রেপ্তার করতে বুরুঙ্গাছড়াতে যান ট্যাকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই জিয়াউর রহমান।
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ দেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে রমিজ উদ্দিন, কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে ধরে ফেলেন এবং নাকে-মুখে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পুলিশের এমন মারধরে রমিজ উদ্দির গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
আহত রমিজকে পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে স্থানীয় বড়ছড়া বাজারে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে এএসআই জিয়াউর রহমান আসামিকে আঘাত করার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, রমিজের নামে তাহিরপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় একটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। তাকে ধরতে গেলে ঘটনাস্থল থেকে তিনি পালিয়ে যান। পরে আমরা আসামি ছাড়াই চলে আসি।
এ প্রসঙ্গে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) রাজন কুমার দাস বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে সাতটি মামলা আদালতে চলমান এবং একটি মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল। পুলিশ তার দোকানে গিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করতে চাইলে তিনি কৌশলে দোকানের পিছন দিক দিয়ে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী আরেকটি বাড়িতে যান। সেখানে পুলিশ গেলে ওই বাড়ির লোকজনের মাধ্যম বাঁধার শিকার হয়। এরমধ্যে আসামী ওই বাড়ি থেকেও পালিয়ে গেলে পুলিশ ফিরে আসে।‘
তিনি বলেন, ‘আসামী প্রায় ১০-১৫ মিনিট দৌড়ে আরেকটি বাড়িতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। আমরা যতদুর জেনেছি তিনি শ্বাসকষ্টের রোগী ছিলেন, তার হার্টেও সমস্যা ছিল এবং সম্প্রতি চিকিৎসাও নিয়েছেন। মরদেহের সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তার গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন ছিল না। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট আসলে পরিবারের অভিযোগের অসত্যতা প্রমাণ হবে।‘