শাল্লায় আশ্রয়ণের ঘর বেদখল, রাখা হচ্ছে গরু-মহিষ-ট্রাক্টর

আশ্রয়ণের ঘর দখল করে বানানো হয়েছে গোয়ালঘর। ছবি: সিলেট ভয়েস।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুটি ঘর দখল করে বানানো হয়েছে গোয়ালঘর। গবাদিপশু ছাড়াও রাখা হচ্ছে কৃষি সরঞ্জাম।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ভেড়ামোহনা নদী তীরবর্তী স্থানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ (মুজিববর্ষ) উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা হয় ১০৬টি ঘর।

উপজেলার শ্রীহাইল গ্রাম থেকে ১০৬ জন ভূমি ও গৃহহীনদেন বাছাই করে তাদেরকে পুনর্বাসন করা হয় এসকল ঘরে। নবনির্মিত গ্রামের নাম দেওয়া হয় মুজিবনগর।

সম্প্রতি সরেজমিনে মুজিবনগরে গিয়ে দেখা যায় আশ্রয়ণের দুটি ঘরের দখল নিয়ে একটিতে রাখা হচ্ছে গরু-বাছুর এবং অপরটিতে থাকছে পানির পাম্প, ট্রাক্টরসহ কৃষি সরঞ্জামাদি। ঘরের পিছনে ও বাঁশের বেড়া দিয়ে রাখা হচ্ছে মহিষ।

স্থানীয়রা জানান, এ ঘরদুটি সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মোফাজ্জল মিয়া ও তার ভাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আফজাল মিয়ার দখলে।

মুজিবনগরের অন্যান্য বাসিন্দারা গরু-মহিষের গো-মুত্রের দুর্গন্ধে অতিষ্ট হলেও প্রভাবশালী আফজাল-মোফাজ্জলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোন অভিযোগ করেননি কর্তৃপক্ষের কাছে।

স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, ‘এই ঘর আফজাল মিয়ার। এখানে মানুষ থাকে না। দিনের বেলা গরু হাওরে থাকে। সন্ধ্যার পর থেকে গরু ঘরের বারান্দায় ও ভেতরে রাখে। পিছনে বাঁশের ব্যারিকেড দেয়া জায়গায় মহিষ রাখা হয়।‘

পরিচয় প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে মুজিবনগরের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আফজাল মিয়া মুজিবনগরের ঘর ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িত। দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি ঘর নিজের দখলে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর এভাবে ব্যবহার করা অনুচিত, তবুও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তাদের বিরুদ্ধে।

যোগাযোগ করা হলে সাবেক ইউপি সদস্য মোফাজ্জল মিয়া বলেন, ‘এ ঘরটি (গোয়ালঘর) আমার ফুফু আছিরন বিবির। ফুফুর কোন সন্তানাদি না থাকায় ঘরটি গোয়ালঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।‘

সরকারি আশ্রয়ণের ঘর দখল নিয়ে গোয়ালঘর বানানোর প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আফজল মিয়া বলেন, ‘আপনারা যেহেতু ফোন দিয়েছেন আমাকে, ২-৩ দিনের সময় দেন আমি এসব সরিয়ে ফেলবো।‘

সার্বিক বিষয়ে অবগত করা হলে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যাপারে সকল তথ্য নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।‘