মণিপুরী নৃত্য ধর্মীয় আচারের অংশ হলেও এখন সেটি বিশ্বে সুনাম কুঁড়াচ্ছে। এ নৃত্য শুধু এখন মণিপুরী সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না, বাঙালি জাতি ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। বাঙালি জাতির সংস্কৃতিতে যোগ হয়েছে মণিপুরী নৃত্য।
শুক্রবার (৩০ মার্চ) সকালে সিলেটে একাডেমি ফর মণিপুরী কালচার অ্যান্ড আটর্স (এমকা)-এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জতিক হোলি উৎসবের আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী।
সিলেট নগরীর মণিপুরী রাজবাড়ি শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু মণ্ডপে অনুষ্ঠিত এ উৎসবে সহযোগিতা করে সিলেট সিটি করপোরেশন।
উৎসবের আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন এমকার সভাপতি দিগেন সিংহ। মঙ্গল প্রদীপ জ্বেলে আয়োজনের উদ্বোধন করেন সিলেটে ভারতের ভারপ্রাপ্ত সহকারী হাইকমিশনার শকুন্তলা কালরা।
সংস্কৃতিকর্মী শর্মিলা দেবের সঞ্চালনায় ও নাট্য সংগঠক উত্তম সিংহের পরিকল্পনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের সাবেক ইউরোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রমোদ রঞ্জন সিংহ, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শান্তনু দত্ত, ভারত মণিপুরের মৃদঙ্গ ও নট সংকীর্তন প্রশিক্ষক ই. নাওবী সিংহ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শান্তনা দেবী। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, কবি ও সংগঠক শাওন পান্থ, নৃত্যশিল্পী ও প্রশিক্ষক ওয়ার্দা রিহাব, সঙ্গীত শিল্পী সুবর্ণা রহমান, সংগঠক ও বাচিক শিল্পী মুনিরা সুলতানা প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে বৃন্দাবন লীলায় ব্রজবাসীগণ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং তাঁর অন্তরঙ্গা শক্তি রাধা রানীকে একত্রে পেয়ে সীমাহীন আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে তাঁদের চরণে আবির ঢেলে রঞ্জিত করে দেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধা রানীও এ আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেন। এর আগে ওই দিনটি ছিল ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমা তিথি। পরবর্তীতে বৃন্দাবনবাসীরা ওই আনন্দ আয়োজন ভুলতে পারেননি। এ জন্য আজও মানুষ পালন করে চলেছে। এই দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আর রাধা রানীকে বৃন্দাবন বাসীরা প্রেমানন্দে দোলনায় দোল দিয়েছিল বলে এই উৎসবটিকে দোল উৎসবও বলা হয়। আর ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমাকে বলা হয় দোল পূর্ণিমা। উৎসবটি পরবর্তীতে সমগ্র ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। উৎসবটি পরে হোলি নামে খ্যাতি পায়।
আলোচনাপর্ব শেষে এমকার শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এরপর হোলি পালা, মৃদঙ্গ নৃত্য পরিবেশন করা হয়। পরে হোলির এমকা ও উপস্থিত দর্শকদের পরস্পর বিভিন্ন রঙের আবির মাখিয়ে হোলি উৎসব উদযাপন করা হয়।