রুশ কারাপ্রধানসহ ছয় ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বিবিসির এক প্রতিবেদেনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্য রাশিয়ার আর্কটিক পেনাল কলোনির শীর্ষ ছয় কর্মকর্তার সম্পদ জব্দ করেছে। দেশটির বিরোধী নেতা ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনির মৃত্যুর পর এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়া এসব ব্যক্তিরা যুক্তরাজ্য ভ্রমণও করতে পারবেন না।
নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ব্যক্তিরা হলেন- পেনাল কলোনির প্রধান কর্নেল ভাদিম কনস্টান্টিনোভিচ কালিনিন, কলোনির পাঁচ উপপ্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল সের্গেই নিকোলাভিচ কোরজভ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভ্যাসিলি আলেকজান্দ্রোভিচ ভিড্রিন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল ভ্লাদিমির ইভানোভিচ পিলিপচিক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলেকজান্ডার ভ্লাদিমিরোভিচ গোলিয়াকভ এবং কর্নেল আলেকজান্ডার ভ্যালেরিভিচ ওব্রেজটসভ।
পশ্চিমা নেতারা নাভালনির মৃত্যুর বিষয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ দেশটির কর্তৃপক্ষকে অভিযুক্ত করে আসছেন। এরপরই যুক্তরাজ্য নতুন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা স্পষ্ট যে রুশ কর্তৃপক্ষের জন্য নাভালনি হুমকি হয়ে উঠেছিলেন। এজন্য তারা বারবার তাকে থামাতে চেয়েছিলেন। রাশিয়ার নিপীড়নমূলক আচরণ নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই।
তিনি বলেন, এজন্য তিনি শেষ সময়ে যে কারাগারে ছিলেন সেখানকার কলোনির শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর আমরা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। যারা এমন নৃশংস আচরণের সাথে জড়িত তাদের সকলকে জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা হবে।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বলেন, নাভালনির সাথে নৃশংস আচরণের ব্যাপারে জড়িতদের ছাড় নয়। আমরা তাদের জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসব। অন্যদিকে ব্রিটিশ সরকার অবিলম্বে নাভালনির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর ও বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
নাভালনির মায়ের অভিযোগ, তিনি তার সন্তানের সাথে পাঁচ দিন দেখা করার চেষ্টা করেছেন। তবে তিনি এটাও জানতে পারেননি যে, সে কোথায় রয়েছে। এরপর যুক্তরাজ্য এমন দাবি জানিয়েছে।
২০২০ সালের আগস্টে সাইবেরিয়ার টমসক শহর থেকে উড়োজাহাজে করে মস্কোয় ফেরার পথে নাভালনিকে রুশ নার্ভ এজেন্ট ‘নোভিচক’ বিষ প্রয়োগ করা হয়। এ জন্য সরাসরি পুতিনকে দায়ী করে আসছিলেন নাভালনি। যদিও পুতিন এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এরপর বিদেশে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি দেশে ফিরলে মস্কো বিমানবন্দরেই তাকে গ্রেপ্তার করে রুশ কর্তৃপক্ষ। এরপর বিভিন্ন মামলায় ১৯ বছরের সাজা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) একটি কারাগারে তার মৃত্যু হয়।