সিলেট নগরীর কালীঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় চিনি, পেঁয়াজ, সবজিসহ অন্যান্য মালামাল ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহনযোগে বিভিন্ন বাজারে যাওয়া ও আসার পথে মালামাল লুটে নেয়া, ব্যবসায়ীদের হয়রানি, শ্রমিকদের উপর নির্যাতন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বেশ কয়েকটি সংগঠন।
সংগঠনগুলো হলো- সিলেট ব্যবসায়ী সমিতি ও যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় পরিষদ ও সিলেট জেলা ট্রাক- পিকআপ-কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেট ও হাজী নওয়াব আলী সবজি মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা মিছিল সহকারে সিলেটের জেলা প্রশাসক, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশার, পুলিশ সুপার বরাবরে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় তারা জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভও করেন।
স্মারকলিপি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সিলেট বিভাগের প্রাচীনতম বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে খ্যাত কালিঘাট পাইকারী বাজার ও এর আশেপাশের ৬টি এলাকা থেকে থেকে প্রতি দিন ট্রাকসহ বিভিন্ন ছোট-বড় যানবাহনে করে সারা সিলেটে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কিছুদিন যাবৎ এই বাণিজ্যিক এলাকায় সকালে ও রাতে কিছু সংখ্যক সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে মালামাল লোড-আনলোডে বাঁধা প্রদান করে চাঁদা দাবী করে এবং বাজারে আগত ব্যবসায়ীগণ মালামাল ক্রয় করে যানবাহনে করে নিয়ে যাওয়ার ও বাজারে মালামাল প্রবেশের সময় শহরের বিভিন্ন স্থানে গাড়ী আটকিয়ে মালামাল লুটে নেয়।
এধরণের কাজের সাথে আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্যরা জড়িত রয়েছেন বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা বলেন, এমতাবস্থায়, বাজারের ব্যবসায়ীরাসহ আগত অন্যান্য এলাকার ব্যবসায়ী ও পরিবহন শ্রমিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে। এসব কার্যকলাপের ফলে বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য বিঘ্নিত হচ্ছে এবং আইন-শৃঙ্খলার বাহিনী ও সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির উপর এর প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন তারা।
ব্যবসায়ীরা হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যদের নিরব ভূমিকার ফলে বৃহত্তর বাণিজ্যিক এলাকার ব্যবসায়ীগণ ও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যা যেকোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনায় রূপ নিতে পারে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখিত অভিযোগ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে এবং সরকার নির্দেশিত দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের লক্ষে আগামী ৭ দিনের মধ্যে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি তাহমিন আহমেদ, সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো: জিয়াউল হক, সাধারণ সম্পাদক হাজী মো: দিলওয়ার হোসেন, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সমন্বয় পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী আব্দুর গফ্ফার মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম মুনিম, সিলেট জেলা ট্রাক-পিকআপ, কাভার্ডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো: দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি আব্দুস ছালাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর, সিলেট ট্রেড সেন্টার ভেজিটেবল মার্কেটের সভাপতি মো. ছাদ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মো: রাজু আহমদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আলেক মিয়া, হাজী নওয়াব আলী সবজি মার্কেটের সভাপতি আলহাজ্ব মো: আবুল হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক কাজী
বোরহান উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সিলেট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য সৈয়দ জাহিদ উদ্দিন, খালেদ হোসেন, হুরেয়ারা ইফতার হোসেন, হাজী রহমত মিয়া, শরিফ হোসেন, শ্রমিক কল্যাণ সংস্থার সভাপতি বাহার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক লিটন মিয়া প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদানে অংশ নেন।